শিরোনাম: |
আয়ারল্যান্ডকে ২২ রানে হারলো বাংলাদেশ
|
![]() ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজও দুর্দান্ত জয়ে শুরু করলো বাংলাদেশ। বৃষ্টিবিঘ্নিত প্রথম টি-টোয়েন্টিতে আয়ারল্যান্ডকে ২২ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। ব্যাট-বলের দারুণ লড়াই এবং আধিপত্য দেখিয়ে ম্যাচটা নিজেদের করে নেয় স্বাগতিকরা। আত্মবিশ্বাসী এই জয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে বাংলাদেশ। ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টিতেও বাংলাদেশের টস ভাগ্য ফেরেনি। সফরে টানা চতুর্থ টস জয় আয়ারল্যান্ডের। এবারও বাংলাদেশকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে ব্যাকফুটে অতিথিরা। রনি তালুকদার ও লিটন দাসের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ ১৯.২ ওভারে ৫ উইকেটে ২০৭ রান তোলে। বৃষ্টির বাগড়ায় বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হয়নি। বেরসিক বৃষ্টির দাপটে ২ ঘণ্টা তিন মিনিট খেলা বন্ধ থাকায় ম্যাচের আমেজই নষ্ট হয়ে যায়। বৃষ্টি আইনে আয়ারল্যান্ড ৮ ওভারে ১০৪ রানের লক্ষ্য পায়। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৮১ রানের বেশি করতে পারেনি তারা। বাংলাদেশের জয়ের নায়ক রনি তালুকদার ৩৮ বলে ৬৭ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলেন। ক্যারিয়ারের প্রথম আন্তর্জাতিক ফিফটি দিয়ে বাংলাদেশের জয়ে বড় অবদান রেখেছেন এ ব্যাটসম্যান। তবে ম্যাচের শেষ দিকে সীমানায় ফিল্ডিং করতে গিয়ে কাঁধে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন এ ক্রিকেটার। অতিথিদের আমন্ত্রণে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশের দুই ওপেনার শুরু থেকে চার-ছক্কার ডালাপালা মেলে ধরেন। তাদের ঝড়ে স্রেফ এলোমেলো হয়ে যায় আইরিশদের বোলিং আক্রমণ। পাওয়ার প্লে’তে ৮১ রান তুলে নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তোলার রেকর্ডও গড়েন দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। আগের সর্বোচ্চ ছিল ৭৬, নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১৩ সালে। দুই ব্যাটসম্যান সমানতালে আগ্রাসন দেখিয়েছেন। প্রথম ওভারেই লিটন স্পিনার টেক্টরকে এগিয়ে এসে লং অন দিয়ে ছক্কা উড়ান। পরের ওভারে রনি তালুকদার পুল করে মার্ক আডায়ারকে হাওয়ায় ভাসিয়ে সীমানার বাইরে পাঠান। ওই ওভারে লিটনের ব্যাট থেকে আসে আরেকটি চার। ৩ ওভারে ৩৩ রান তোলা বাংলাদেশ। পরের ৩ ওভারে পায় ৪৮ রান। যে ঝড়ের শুরুটা করেছিলেন লিটন। চতুর্থ ওভারে ইয়ংকে দুই চারের সঙ্গে একটি ছক্কা উড়ান মিড উইকেট দিয়ে। পরের ওভারে লং অফ দিয়ে পেসার ডেনালিকে আরেকটি ছক্কা হাঁকান। চতুর্থ ও পঞ্চম ওভারে রনি মাত্র ৩ বল খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। তিন সিঙ্গেলেই সন্তুষ্ট থাকেন। কিন্তু পাওয়ার প্লে’র শেষ ওভারে রনি রুদ্রুমূর্তি ধারণ করেন। পেসার মার্ক আডায়কে লং অফ দিয়ে ফ্লাট সিক্স মারার পর পরপর তিন বলে তিন চার হাঁকান চোখের পলকে। ওই ওভারে ২০ রান তুলে দলকে বড় সংগ্রহের পথে নিয়ে যান রনি। আক্রমণের ধার চালু রেখে রনি ২৪ বলে ফিফটি তুলে নিলেও লিটন মিস করেন মাত্র ৩ রানের জন্য। দুই বছরের অপেক্ষা ফুরিয়ে টি-টোয়েন্টিতে উদ্বোধনী জুটিতে সেঞ্চুরির অপেক্ষায় ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ৪৭ রানে লিটনের বিদায়ে ভাঙে শুরুর আক্রমণ। ২৩ বলে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় লিটন সাজান নিজের ইনিংস। ফিফটির পর রনি কিছুটা থমকে গেলেও শান্ত ও শামীম নেমে আক্রমণের ধার বাড়ান। শান্তর ব্যাট থেকে ১৩ বলে ১৪ রান আসে এবং ব্যাটিংয়ে প্রমোশন পাওয়া শামীম সুযোগটা দারুণভাবে কাজে লাগিয়ে ২০ বলে ৩০ রান করেন ২ চার ও ১ ছক্কায়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রনির প্রথম ফিফটির ইনিংস থামে ৬৭ রানে। হুমের বল স্লগ করতে গিয়ে বোল্ড হন ৭ চার ও ৩ ছক্কায় বিস্ফোরক ইনিংসটি সাজানো এ ব্যাটসম্যান। শেষ দিকে এসে হৃদয়ের ৮ বলে ১৩ ও সাকিবের ১৩ বলে ২০ রানের ইনিংসে মনে হচ্ছিল টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের রেকর্ড রান ছাড়িয়ে যাবে বাংলাদেশ। ২০১৮ সালে কলম্বোতে নিদাহাস ট্রফিতে দ্বিতীয় ইনিংসে ২১৫ রান করেছিল বাংলাদেশ। এছাড়া ওই বছরই দেশের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২১১ রান করেছিল। আজ সুযোগ ছিল সব রান ছাড়িয়ে যাওয়ার। কিন্তু বেরসিক বৃষ্টিতে ইনিংসের শেষ ৪ বল খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। তাতে ২০৭ রানেই শেষ হয় দলীয় ইনিংস। বৃষ্টিতে খেলা বিঘ্ন না হলে আয়ারল্যান্ডকে রানের পাহাড় টপকাতে হতো। যদিও ৮ ওভারে ১০৪ রানও চূঁড়ায় ওঠার শামিল। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা খারাপ করেনি অতিথিরা। প্রথম দুই ওভারে ৩২ রান তোলেন স্টারলিং ও আডায়ার। তৃতীয় ওভারে হাসান মাহমুদ উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর তাসের ঘরের মতো ভাঙতে থাকে আয়ারল্যান্ডের ব্যাটিং। আডায়ারকে বোল্ড করেন পেসার হাসান প্রথম সাফল্য পান। পরের ওভারে তাসকিন পান তিন উইকেট। প্রথম ও চতুর্থ বলে টাকার ও স্টারলিংকে বোল্ড করার পর পঞ্চম বলে ডর্করেলকে সীমানায় তালুবন্দি করান। নিজের প্রথম ওভারে ৭ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচের ভাগ্য তাসকিনই লিখে দিয়েছিলেন। নিজের দ্বিতীয় ওভারে ফিরে হাসান ১৬ রান দিলেও সাকিব ও মোস্তাফিজ পরিস্থিতি ভালোভাবে সামলে নিয়ে বাংলাদেশের বড় জয় নিশ্চিত করেন। শেষ ৬ বলে ৩২ রান দরকার ছিল অতিথিদের। কিন্তু কঠিন সমীকরণ মেলাতে পারেননি তারা। নিজের দ্বিতীয় ওভার করতে এসে তাসকিনের পকেটে যুক্ত হয় আরো ১ উইকেট। ১৬ রানে ৪ উইকেট নিয়ে টি-টোয়েন্টিতে তার ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ। শুরুতে রনির ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়েছিল আয়ারল্যান্ড। পরবর্তীতে তাসকিনের আগুনে পুড়তে হয় তাদের। তাতেই ম্যাচটা নাগালে চলে আসে বাংলাদেশের। |