শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, 2০২3
শিমু হত্যায় সরাসরি অংশ নেয় ফরহাদ, বর্ণনা দিলেন স্বামী
হাজারিকা অনলাইন ডেস্ক
Published : Friday, 21 January, 2022 at 5:45 PM

অভিনেত্রী রাইমা ইসলাম শিমু হত্যা মামলার আসামি স্বামী সাখাওয়াত আলীম নোবেল ও তার বাল্যবন্ধু এস এম ওয়াই আব্দুল্লাহ ফরহাদ। ফরহাদের তেমন উপার্জন না থাকায় কয়েকদিন পরপরই সকালে নোবেলের বাসায় টাকা-পয়সা নিতে যেতেন। অন্যদিকে নোবেল একসময় নেশায় আসক্ত ছিলেন। তিনি কিডনি ও লিভারের সমস্যাসহ নানা রোগে ভুগছেন। ফলে শারীরিকভাবে তিনি অনেকটাই দুর্বল ছিলেন। ঘটনার দিন সকালে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া হয় নোবেলের, একপর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হলে শিমুকে একা কাবু করতে পারছিলেন না নোবেল। তখন বন্ধুর পক্ষ নেন ফরহাদ। এক পর্যায়ে শিমুকে দুজনে মিলেই গলাটিপে হত্যা করেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আসামিদের তিন দিনের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শুক্রবার দুপুরে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় এক সংবাদ সম্মেলন এসব তথ্য জানান ঢাকা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) হুমায়ুন কবির। এর আগে সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ জানিয়েছিলো, দাম্পত্য কলজের জেরে নোবেল নিজেই শিমুকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে বাল্যবন্ধু ফরহাদকে ডেকে এনে লাশ গাড়িতে তুলে কেরানীগঞ্জে ফেলে আসেন তারা। তবে তিন দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের পর নতুন তথ্য পাওয়ার কথা জানান কেরানীগঞ্জ মডেল থানার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির। তিনি বলেন, দাম্পত্য কলহের কারণে স্বামী নোবেল ও তার বন্ধু ফরহাদ মিলে নিজ বাসায় গলাটিপে হত্যা করেন শিমুকে।

এদিকে বৃহস্পতিবার ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে শিমু হত্যার দায় স্বীকার করে নোবেল ও ফরহাদ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এরপর তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। বর্তমানে আসামিরা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে হুমায়ুন কবির বলেন, ১৬ জানুয়ারি সকালে নোবেলের গ্রিন রোডের বাসায় হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়। ঘটনার কিছু সময় আগে সেখানে উপস্থিত হন ফরহাদ। ফরহাদ নোবেলের বাল্যবন্ধু। প্রায় ৪০ বছরের সম্পর্ক তাদের। ফরহাদ ছিল বেকার। মাঝে মধ্যে সে নোবেলের কাছ থেকে টাকা নিয়ে চলত। ১৬ জানুয়ারি সকালে দুই হাজার টাকা ধার নিতে ফরহাদ নোবেলের বাসায় যায়। এ সময় তাকে চা দেন শিমু।

তিনি আরও বলেন, ফরহাদ ড্রয়িং রুমে বসেই চা খাচ্ছিল। এরই মধ্যে পাশের বেডরুমে নোবেল ও শিমুর মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। হইচই শুনে ফরহাদ ড্রয়িং রুম থেকে শিমুর বেডরুমে যায়। এ সময় মেজাজ হারিয়ে শিমুকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় নোবেল। সেখানে ফরহাদ হাজির হলে নোবেল তাকে সহায়তা করতে বলে। ফরহাদ ছিল নোবেলের বাধ্যগত। এ জন্য সে নোবেলের কথামতো শিমুকে চেপে ধরে। এর পর দুজন মিলে গলাটিপে হত্যা করে শিমুকে।

শিমু ও নোবেলে মধ্যে কী নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল জানতে চাইলে তা এড়িয়ে গিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর বলেন, নোবেল ও ফরহাদ গত বৃহস্পতিবার আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। এ বিষয়ে পুলিশ আরো তদন্ত করছে। সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, নোবেল একসময় নেশায় আসক্ত ছিলেন। এখন তিনি কিডনি ও লিভারের সমস্যাসহ নানা রোগে ভুগছেন। ফলে শারীরিকভাবে তিনি অনেকটাই দুর্বল। রোববার সকালে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়ার একপর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হলে শিমুকে একা কাবু করতে পারছিলেন না নোবেল। তখন ফরহাদ বন্ধুর পক্ষ নেন। এক পর্যায়ে শ্বাসরোধে শিমুর মৃত্যু হয়।

এর আগে, মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাবেয়া বেগমের আদালত এ আসামিদের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকার কেরানীগঞ্জের হজরতপুর ব্রিজের কাছে আলিয়াপুর এলাকায় রাস্তার পাশে ঝোপের ভেতর থেকে রাইমা ইসলাম শিমুর লাশ উদ্ধার করা হয়। ৪১ বছর বয়সী এই অভিনেত্রী সপরিবারে ঢাকার কলাবাগান থানাধীন গ্রিন রোড এলাকায় বসবাস করতেন। লাশটি শনাক্ত করার পরপরই এই হত্যা রহস্য উদঘাটন করার জন্য কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ ব্যাপক তৎপড়তা শুরু করে।

পরদিন মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার সংবাদ সম্মেলনে জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুরুত্বপূর্ণ আলামত সংগ্রহ করে। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ সুপার ঢাকার নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কেরানীগঞ্জ সার্কেলের নেতৃত্বে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ওসি ও মামলার তদন্তকারী অফিসার ভিকটিম চিত্রনায়িকা শিমুর বাসায় যান এবং তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করা শুরু করেন।

পরিকল্পিতভাবে এই চিত্রনায়িকাকে হত্যার পর খুনিরা লাশটি কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন হযরতপুরে ফেলে যায় বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হলেও তারা (খুনি) কিছু চিহ্ন রেখে যায়। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ আলমতগুলো জব্দ করি এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ভিকটিম চিত্রনায়িকা শিমুর স্বামী খন্দকার শাখাওয়াত আলীম নোবেল (৪৮) ও তার বাল্যবন্ধু এস এম ওয়াই আব্দুল্লাহ ফরহাদকে (৪৭) আটক করি। রাতেই আটক দুজনকে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় নিয়ে আসা হয়। সেখানে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে এই হত্যাকাণ্ডে তাদের সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়া যায়।


প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল হাজারী।   ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: গোলাম কিবরীয়া হাজারী বিটু্।   প্রকাশক: মোঃ ইব্রাহিম পাটোয়ারী।
সহ সম্পাদক- রুবেল হাসান: ০১৮৩২৯৯২৪১২।  বার্তা সম্পাদক : জসীম উদ্দিন : ০১৭২৪১২৭৫১৬।  সার্কুলেশন ম্যানেজার : আরিফ হোসেন জয়, মোবাইল ঃ ০১৮৪০০৯৮৫২১।  রিপোর্টার: ইফাত হোসেন চৌধুরী: ০১৬৭৭১৫০২৮৭।  রিপোর্টার: নাসির উদ্দিন হাজারী পিটু: ০১৯৭৮৭৬৯৭৪৭।  মফস্বল সম্পাদক: রাসেল: মোবা:০১৭১১০৩২২৪৭   প্রকাশক কর্তৃক ফ্ল্যাট নং- এস-১, জেএমসি টাওয়ার, বাড়ি নং-১৮, রোড নং-১৩ (নতুন), সোবহানবাগ, ধানমন্ডি, ঢাকা থেকে প্রকাশিত এবং সিটি প্রেস, ইত্তেফাক ভবন, ১/আর কে মিশন রোড, ঢাকা-১২০৩ থেকে মুদ্রিত।  বার্তা, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ০২-৪১০২০০৬৪।  ই-মেইল : [email protected], web : www.hazarikapratidin.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি