শুক্রবার, ২৯ মার্চ, 2০২4
সেই রাতের বর্ণনা দিলেন সুইপার সুলাই লাল
হাজারিকা অনলাইন ডেস্ক
Published : Saturday, 17 October, 2020 at 10:13 AM

সেই রাতে অর্থাৎ রোববার (১১ অক্টোবর) রাতে রায়হান উদ্দিনকে (৩০) সুস্থ অবস্থায় বন্দরবাজার ফাঁড়িতে ধরে আনা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শী সুলাই লালও।  ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সুইপার সুলাই লাল বলেন, ছেলেটিকে আমার ঘর থেকে সুস্থ অবস্থায় ধরে নেওয়া হয়।
ওই রাতে আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ দরজায় শব্দ শুনে আমার ঘুম ভেঙে যায়। তাকিয়ে দেখি ছেলেটি (রায়হান) দরজা ধাক্কা (ধাক্কায় জোড়াতালির ছিটকানি ছুটে যায়) দিয়ে ঘরে ঢুকেছে। আমি মনে মনে ভয় পেলাম। এতো রাতে আমার দরজা ঠেলে কে এলো? আমি জিজ্ঞাসা করলাম- কে ভাই আপনি? তখন দেখলাম ছেলেটি নিঃশ্বাস নিতে পারছে না, কথাও বলতে পারছে না। এর পাঁচ মিনিটের মধ্যে পুলিশ এসে হাজির। পুলিশ বাসায় ঢুকে রায়হানকে ধরে। কিন্তু সে যেতে চাচ্ছিল না এবং আমাকে বলছিল- আমি ছিনতাইকারী না। আমিও ভয়ে কিছু বলার মতো অবস্থায় ছিলাম না।
 
সুলাই লাল বলেন, ছেলেটিকে আমার বাসা থেকে সুস্থ অবস্থায় আটক করে নিয়ে যায়। পরদিন শুনি ছেলেটি নাকি ছিনতাইকালে গণপিটুনিতে মারা গেছে। শুনে মনটা খুব খারাপ হলো। তবে এখানে কোনো গণপিটুনি হয় নাই, আমি নিশ্চিত।  পুলিশ ভালো অবস্থায়ই তাকে ধরে নিয়েছে বলে জানান সুইপার কলোনির মৃত দিল মলি লালের ছেলে সুলাই লাল। এদিন কাস্টঘরেও কোনো গণপিটুনির ঘটনা ঘটেনি। প্রাথমিক তদন্তেও সিসি ক্যামেরার ফুটেজে মেলেনি গণপিটুনির কোনো প্রমাণ। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কাস্টঘরের সুইপার সুলাই লালের বক্তব্য এমনই। 
 
এছাড়া নির্যাতনের আগে রায়হান শারিরিকভাবে সুস্থ ছিলেন। অতিমাত্রায় নির্যাতনের কারণে তার মৃত্যু হয়। দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত শেষে সাংবাদিকদের এমনটিই নিশ্চিত করেছেন ওসমানী মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. শামসুল ইসলাম।
 ঘটনার রাতে ২টা ৯ মিনিটে রায়হানকে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে ধরে আনেন এএসআই আশিক এলাহি। এরপর তাকে নেওয়া হয় ইনচার্জ উপরিদর্শক (এসআই) আকবরের কক্ষে। সেখানে লাঠি দিয়ে তাকে উপর্যুপরি আঘাত করা হয়। আকবরের সঙ্গে অতি উৎসাহী হয়ে রায়হানকে পেঠান কনস্টেবল হারুন ও টিটু। এসময় রায়হানকে মারতে এসআই আকবরকে নিষেধ করেন আশিক এলাহি। কিন্তু তার কথা শোনেননি আকবর। ফাঁড়ির প্রত্যক্ষদর্শী এক পুলিশ সদস্য এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
 
গত রোববার (১১ অক্টোবর) ভোররাতে পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতন করায় অসুস্থ হয়ে পড়েন ছিনতাইকারী সন্দেহে আটক রায়হান। এ অবস্থায় তাকে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর আকবরসহ চার পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়। ঘটনার পর রোববার থেকে আকবর পলাতক রয়েছেন।
 
মামলাটি পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) স্থানান্তর  করা হয়। তদন্ত ভার পাওয়ার পর পিবিআইর টিম ঘটনাস্থল বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ি, নগরের কাস্টঘর ও নিহতের বাড়ি পরিদর্শন করে। বৃহস্পতিবার মরদেহ কবর থেকে তুলে ফের ময়নাতদন্ত করা হয়। রায়হান হত্যার ঘটনায় এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ জড়িতদের গ্রেফতার  ও ফাঁসির দাবিতে জোরদার হচ্ছে আন্দোলন। প্রতিদিন সিলেট নগরের বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশ, মানববন্ধন এবং রাস্তা অবরোধ করেছেন বিক্ষুব্ধ জনতা।
"সূত্র বাংলানিউজ"
আরও খবর


সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল হাজারী।   ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: গোলাম কিবরীয়া হাজারী বিটু্।   প্রকাশক: মোঃ ইব্রাহিম পাটোয়ারী।
সহ সম্পাদক- রুবেল হাসান: ০১৮৩২৯৯২৪১২।  বার্তা সম্পাদক : জসীম উদ্দিন : ০১৭২৪১২৭৫১৬।  সার্কুলেশন ম্যানেজার : আরিফ হোসেন জয়, মোবাইল ঃ ০১৮৪০০৯৮৫২১।  রিপোর্টার: ইফাত হোসেন চৌধুরী: ০১৬৭৭১৫০২৮৭।  রিপোর্টার: নাসির উদ্দিন হাজারী পিটু: ০১৯৭৮৭৬৯৭৪৭।  মফস্বল সম্পাদক: রাসেল: মোবা:০১৭১১০৩২২৪৭   প্রকাশক কর্তৃক ফ্ল্যাট নং- এস-১, জেএমসি টাওয়ার, বাড়ি নং-১৮, রোড নং-১৩ (নতুন), সোবহানবাগ, ধানমন্ডি, ঢাকা থেকে প্রকাশিত এবং সিটি প্রেস, ইত্তেফাক ভবন, ১/আর কে মিশন রোড, ঢাকা-১২০৩ থেকে মুদ্রিত।  বার্তা, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ০২-৪১০২০০৬৪।  ই-মেইল : [email protected], web : www.hazarikapratidin.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি