মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, 2০২4
কুমিল্লায় পানিতে চুবিয়ে দুই মেয়েকে হত্যা, বাবা ও সৎ মা গ্রেপ্তার
হাজারিকা অনলাইন ডেস্ক
Published : Sunday, 24 May, 2020 at 9:29 AM

ঈদের উপহার কিনে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে দুই মেয়েকে ডোবার পানিতে চুবিয়ে হত্যা ও লাশ গুমের অভিযোগ উঠেছে বাবা ও সৎ মায়ের বিরুদ্ধে। পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেছে। এই হৃদয়বিদারক ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাতে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার নবীপুর গ্রামে। হত্যাকাণ্ডের শিকার দুই শিশু স্বর্ণা আক্তার (১১) ও ফারিয়া আক্তারের (৬) মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (কুমেক) মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় শিশুদের আপন মা সোনিয়া আক্তারের দায়ের করা মামলায় নিহতদের বাবা সুমন মিয়া (৪১) ও তাদের সৎমা রুনা বেগম (২৬)। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় ঈদ উপলক্ষে পায়ের নূপুর, নাকে নোলক এবং মেহেদী কিনে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে স্বর্ণা ও ফারিয়াকে ডেকে নিয়ে যায় রুনা বেগম। ইফতারের পরও তারা বাড়ি না আসায় সোনিয়া তার সতীনের বাড়ি যায়। এ সময় রুনার শরীরে কাপড় ভেজা দেখে তার সন্দেহ হয়।

এজাহারে বলা হয়েছে, রুনার শরীর ভেজা দেখার পর গ্রামের বিভিন্ন পুকুরে খোঁজা-খুজি শুরু করেন সোনিয়া। পরে রব্বান মিয়া নামে এক স্থানীয়ের ডোবায় তার সন্তানের জুতা ভাসতে দেখে চিৎকার শুরু করেন। এলাকাবাসী ছুটে এসে ডোবায় খোঁজ চালিয়ে স্বর্ণা ও ফারিয়াকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে তাদের মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক স্বর্ণা ও ফারিয়াকে মৃত ঘোষণা করে। গণমাধ্যমকে মামলার বাদী সোনিয়া আক্তার জানান, ঘটনাটি এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়। পরে তারা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও স্থানীয়দের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার স্বামী সুমন ও সতীন রুনাকে থানায় নিয়ে যায়।

নিহত শিশু দুটি মা আরও জানান, বছর তিনেক আগে তাকে না জানিয়ে রুনাকে বিয়ে করেন সুমন। তার ঘরে না রেখে স্থানীয় বাতেন মিয়ার বাড়িতে রুনাসহ ভাড়া থাকতেন তিনি। সুমন তার ও সন্তানদের কোনো খোঁজ-খবর রাখতেন না। বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে গ্রামে মুরগির ফার্ম দেন সোনিয়া। সেই টাকা দিয়ে নিজের সংসার চালাতেন। তার মা দুই নাতনিকে ঢাকায় একটি স্কুলে ভর্তি করায়। তবে লকডাউন ‍শুরু হওয়ায় স্বর্ণা ও ফারিয়া নবীপুর গ্রামে তার কাছে চলে আসে। সোনিয়া বলেন, স্বর্ণা ও ফারিয়া আসার পর থেকেই রুনা তাদের পেছনে লাগে। আমি নিজের মতো করে থাকলেও বুঝতে পারতাম সে আমার মেয়েদের হত্যার পরিকল্পনা করছে। কিছুদিন আগে আমার ছেলে শুভ মিয়াকে (১৩) নবীপুর তামিরুল উম্মাহ এতিমখানা ও মাদরাসা থেকে মা পরিচয় দিয়ে আনতে যায় রুনা। তখন মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ আমাকে ফোন দিলে তাকে সতিন বলে পরিচয় দেই। তাদের এও বলি, রুনার কাছে আমার ছেলেকে দিয়েন না, দিলে মেরে ফেলবে। শুক্রবার সে আমার মেয়েদের মেরে ফেলে। আমি আমার দুই বাচ্চাকে হত্যার বিচার চাই।
এ বিষয়ে মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মনজুর আলম বলেন, শিশুদের উদ্ধারের পর তাদের থুতনির নিচে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। স্থানীয়দের ধারণা পরিকল্পিতভাবে তাদের হত্যা করা হয়েছে। লাশ দুটি মর্গে আছে। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় শিশু দুটির বাবা সুমন ও সৎ মা রুনাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। সকালে তাদের কোর্টে পাঠানো হবে।


সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল হাজারী।   ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: গোলাম কিবরীয়া হাজারী বিটু্।   প্রকাশক: মোঃ ইব্রাহিম পাটোয়ারী।
সহ সম্পাদক- রুবেল হাসান: ০১৮৩২৯৯২৪১২।  বার্তা সম্পাদক : জসীম উদ্দিন : ০১৭২৪১২৭৫১৬।  সার্কুলেশন ম্যানেজার : আরিফ হোসেন জয়, মোবাইল ঃ ০১৮৪০০৯৮৫২১।  রিপোর্টার: ইফাত হোসেন চৌধুরী: ০১৬৭৭১৫০২৮৭।  রিপোর্টার: নাসির উদ্দিন হাজারী পিটু: ০১৯৭৮৭৬৯৭৪৭।  মফস্বল সম্পাদক: রাসেল: মোবা:০১৭১১০৩২২৪৭   প্রকাশক কর্তৃক ফ্ল্যাট নং- এস-১, জেএমসি টাওয়ার, বাড়ি নং-১৮, রোড নং-১৩ (নতুন), সোবহানবাগ, ধানমন্ডি, ঢাকা থেকে প্রকাশিত এবং সিটি প্রেস, ইত্তেফাক ভবন, ১/আর কে মিশন রোড, ঢাকা-১২০৩ থেকে মুদ্রিত।  বার্তা, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ০২-৪১০২০০৬৪।  ই-মেইল : [email protected], web : www.hazarikapratidin.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি