শিরোনাম: |
নেত্রীকে এই ক্ষমতা কে দিয়েছে?
|
জয়নাল হাজারী ॥
বর্তমানে করোনভাইরাসের এই মহাসংকটের দিনে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ ছোটবড় অনেক সমস্যায় পড়েছেন। তার মধ্যে স্বল্প আয়ের ভাড়াটিয়ারা কারণ স্বল্প আয়ের মানুষগুলোর আয় একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে। তাই অত্যন্ত সংগত কারণেই তাদের আকুল আবেদন সরকারের কাছে কমপক্ষে দুই মাসের বাড়িভাড়া মওকুফ করা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছেই বাড়িভাড়া মওকুফের আবেদন করা হচ্ছে। বিপদে পড়লে যেকোন চিন্তাই বিপদ উদ্ধারের জন্য যে কারো মাথায় আসতেই পারে। এটা কোন অন্যায় কিছু নয়। আমি চাইবো পারলে দেবেন, না পারলে দেবেন না, এটা তো খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। মূল বিষয় হচ্ছে ছোট্ট একটি বিষয়ে মাথায় থাকলে ভাড়াটিয়াদের ভুলটি হতো না। আসল কথা হচ্ছে বাড়িটি যদি আমার হয় তাহলে আমার বাড়ির ভাড়া প্রধানমন্ত্রী কি করে মওকুফ করবেন? কোন ব্যক্তি মালিকানার বাড়ি ভাড়া মওকুফের অধিকার প্রধানমন্ত্রীর নাই। তাই প্রধানমন্ত্রীকে বাড়ি ভাড়া মওকুফের কথা যতই বলা হোক তিনি তা কিছুতেই করতে পারবেন না। কোন ব্যক্তিকে তার অধিকার বঞ্চিত ক্ষমতা কারো নেই। আমাদের সংবিধানেই বলা আছে ব্যক্তি স্বাধিনতার অধিকার সকলকে দিতে হবে। এই অধিকার খর্ব করার সুযোগ কারো নেই। এ ব্যাপারে বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়াদের মতামতের মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে। কিছু কিছু বাড়ির মালিক তাদের ভাড়া মওকুফের ঘোষণাও ইতিমধ্যে দিয়েছেন। এটা তারা পারেন কিন্তু প্রধানমন্ত্রী পারেন না। প্রধানমন্ত্রী যেটা পারেন, সেটা হচ্ছে তিনি বৃক্তবান বাড়ির মালিকদের অনুরোধ করতে পারেন। তারা যেন বাস্তবতার নিরিক্ষে বাড়িভাড়া মওকুফের চিন্তা করেন। এতে হয়তো কিছুটা কাজও হবে। তবে পুরোপুরি কাজ হবে এমন গ্যারান্টি দেয়া যাবে না। প্রধানমন্ত্রী আরো একটি কাজ করতে পারেন তা হলো ভাড়াটিয়াদের জন্য বিনাসুদে ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করতে পারেন। আমি মনে করি ভাড়াটিয়াদের এই মূহুর্তে ভাড়া পরিশোধ করতে না পারলেও উদ্বিগ্ন হওয়ার কোন কারণ নেই। যেহেতু বাড়িওয়ালারা এই মূহুর্তে অবশ্যই চাপ সৃষ্টি করবে না। ভাড়ার জন্য কাউকে উচ্ছেদ করার সাহস বর্তমান সময়ের কারণেই এ ব্যাপারেও সরকার একটি প্রজ্ঞাপন জারি করতে পারেন। উচ্ছেদের মামলাও বর্তমান সময়ে কার্যকর কোন ভূমিকা রাখবে না। তবে প্রধানমন্ত্রী নয়, একমাত্র রাষ্ট্রপতি প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে বাড়িভাড়া মওকুফের বিষয়টি বিবেচনা করতে পারেন। কেবলমাত্র সংসদই আইনপাশ করার মাধ্যমে ভাড়াটিয়াদের জন্য যেকোন সুবিধার ব্যবস্থা করতে পারেন। যদিও এইক্ষেত্রে নিশ্চয়ই বাড়ির মালিকদের পক্ষে কথা বলার লোকের কোন অভাব হবে না। সব শেষে ভাড়াটিয়াদের বলি নিশ্চিন্তে থাকুন। আগামী ছয় মাস ভাড়া না দিলেও কারো কোন সমস্যা হবে না। বাড়া মওকুফ করার এই অধিকার প্রধানমন্ত্রীকে কেউ দেয় নাই। বিষয়টি অবশ্যই সকলকে মাথায় রাখতে হবে। আল্লাহ বলছেন কারো পাওনা টাকা পরিশোধ না করে কেউ বেহেশতে যেতে পারবে না। যতক্ষণ পাওনাদার মাফ না করবে ততক্ষণ সে দেনাদার থাকবে। পাওনাদারের টাকা দেনাদারকেই শোধ করতে হবে, কারণ এটা মাফ করার ক্ষমতা আমি আমার হাতে রাখি নাই। সুতরাং বুঝতেই হবে পাওনাদার মাফ না করলে আল্লাহও সেটি মাফ করতে পারে না। প্রধানমন্ত্রী বর্তমান ও ভবিষ্যত সংকট মাথায় রেখে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। আসুন আমরা সবাই তাকে সহযোগীতা করি এবং তার জন্য দোয়া করি। লেখক উপদেষ্টা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও সাবেক সংসদ সদস্য। |