বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, 2০২4
ডাক্তারের হাতে-পায়ে ধরেও চিকিৎসা মেলেনি গৃহবধূর
Published : Saturday, 4 April, 2020 at 9:19 PM

স্টাফ রিপোর্টার ॥
প্রসবব্যথা নিয়ে সরকারি-বেসরকারি চার হাসপাতাল ঘুরেও চিকিৎসা পাননি সুজিনা বেগম (২৮) নামের এক গৃহবধূ। অবেশেষে মারা গেলেন তিনি।
স্বজনদের অভিযোগ, চিকিৎসক ও নার্সদের অবহেলার কারণে মৃত্যু হয়েছে সুজিনার। চারটি হাসপাতালে গেলেও রোগীকে চিকিৎসা দেননি কেউ। গত বৃহস্পতিবার (০২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে অন্তঃসত্ত্বা ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় গৃহবধূর পরিবারে শোকের ছায়া নেমেছে। সুজিনা বেগম কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার মিয়াজিপাড়া গ্রামের ভ্যানচালক শফিকুল ইসলামের স্ত্রী। সুজিনার স্বামী শফিকুল ইসলাম বলেন, গত বুধবার (০১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সুজিনার প্রসবব্যথা শুরু হয়। রাতেই খালা শাশুড়ি আমিনা বেগমকে সঙ্গে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাই। আড়াই ঘণ্টা অপেক্ষা করেও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের দেখা পাইনি। রাত ৯টার দিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত এক চিকিৎসক স্থানীয় আখতারুন্নাহার মেমোরিয়াল হাসপাতালে রোগীকে পাঠিয়ে দেন। সেখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৭০০ টাকার বিনিময়ে সুজিনাকে ভর্তি নেয়। পরে সিজারিয়ান অপারেশনের কথা কথা বলে ওষুধ কিনতে বলেন। আখতারুন্নাহার মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তির পর বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা পর্যন্ত চিকিৎসক আসেননি। এ অবস্থায় রোগীর শারীরিক অবনতি হলে তড়িঘড়ি করে হাসপাতালের লোকজন ৮০০ টাকায় অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল থেকে রোগীকে পাশের বেসরকারি ক্লিনিক গ্রিন লাইফ জেনারেল হাসপাতালে নিতে বলেন চিকিৎসক। সেখানে দুই হাজার ৩৫০ টাকা দিয়ে রোগীকে ভর্তি করে সিজারিয়ান অপারেশনের কথা বলে ওষুধ কিনেন নার্স। পরে চিকিৎসক না থাকায় রোগীর অবস্থার আরও অবনতি হয়। সন্ধ্যায় সেখান থেকে রোগীকে আবারও কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
শফিকুল ইসলামের অভিযোগ, দ্বিতীয় দফায় কুড়িগ্রাম হাসপাতালে নেয়ার পর সুজিনাকে ইনজেকশন দেয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পরই আমার স্ত্রী মারা যায়। এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতাল; এভাবে চার হাসপাতাল ঘুরলাম। ডাক্তার-নার্সের হাতে-পায়ে ধরলাম। তবুও আমার স্ত্রীকে চিকিৎসা দেননি। আমি গরিব মানুষ। অনেক টাকা খরচ করলাম। তবুও স্ত্রীকে বাঁচাতে পারলাম না। আমার আট বছরের একটা শিশু সন্তান এতিম হয়ে গেল। আমি আমার স্ত্রী হত্যার বিচার চাই।
সুজিনার খালা আমিনা বেগম বলেন, দ্বিতীয়বার যখন কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে রোগীকে নিলাম তখন ইনজেকশন দেন ডাক্তার। এরপরও ডাক্তার জানান রোগী মারা গেছে।
উলিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এমনটি হওয়ার কথা নয়।
এ বিষয়ে আখতারুন্নাহার মেমোরিয়াল হাসপাতালের পরিচালক এরশাদুল হক চাঁদ বলেন, রোগীকে হাসপাতারে ভর্তির পর প্রেসার বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খিঁচুনি শুরু হয়। এ অবস্থায় আমাদের এখানে সিজারিয়ান অপারেশন করা সম্ভব ছিল না। এজন্য রোগীকে কুড়িগ্রাম হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা রেদওয়ান ফেরদৌস সজিব বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগও করেনি। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখব।



সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল হাজারী।   ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: গোলাম কিবরীয়া হাজারী বিটু্।   প্রকাশক: মোঃ ইব্রাহিম পাটোয়ারী।
সহ সম্পাদক- রুবেল হাসান: ০১৮৩২৯৯২৪১২।  বার্তা সম্পাদক : জসীম উদ্দিন : ০১৭২৪১২৭৫১৬।  সার্কুলেশন ম্যানেজার : আরিফ হোসেন জয়, মোবাইল ঃ ০১৮৪০০৯৮৫২১।  রিপোর্টার: ইফাত হোসেন চৌধুরী: ০১৬৭৭১৫০২৮৭।  রিপোর্টার: নাসির উদ্দিন হাজারী পিটু: ০১৯৭৮৭৬৯৭৪৭।  মফস্বল সম্পাদক: রাসেল: মোবা:০১৭১১০৩২২৪৭   প্রকাশক কর্তৃক ফ্ল্যাট নং- এস-১, জেএমসি টাওয়ার, বাড়ি নং-১৮, রোড নং-১৩ (নতুন), সোবহানবাগ, ধানমন্ডি, ঢাকা থেকে প্রকাশিত এবং সিটি প্রেস, ইত্তেফাক ভবন, ১/আর কে মিশন রোড, ঢাকা-১২০৩ থেকে মুদ্রিত।  বার্তা, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ০২-৪১০২০০৬৪।  ই-মেইল : [email protected], web : www.hazarikapratidin.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি