শুক্রবার, ২৯ মার্চ, 2০২4
দিল্লির দাঙ্গা: ছয় মুসলিমের প্রাণ বাঁচিয়ে মৃত্যুমুখে প্রেমকান্ত
Published : Thursday, 27 February, 2020 at 4:36 PM

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥
ভারতের দিল্লিতে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। বেছে বেছে মুসলিমদের ওপর ওপর হামলা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মসজিদসহ মুসলিমদের অসংখ্য বাড়িঘর-দোকানপাটে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। তবে হাতের পাঁচটি আঙুল যেমন সমান হয় না, তেমনি হিন্দুদের মধ্যেও সবাই মুসলিমবিদ্বেষী নয়। বরং কেউ কেউ নিজের জীবন বাজি রেখে মুসলিমদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
তেমনই একজন প্রেমকান্ত বাঘেল। তিনি জানান, দিল্লির শিব বিহার এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে সুসম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি দাঙ্গার সময় দুর্বৃত্তরা তার প্রতিবেশী মুসলিমদের বাড়িতে পেট্রোলবোমা দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বেরিয়ে আসেন এ হিন্দু ব্যক্তি। জীবন বাজি রেখে ঝাঁপিয়ে পড়েন প্রতিবেশীদের প্রাণরক্ষায়। আগুনে জ্বলতে থাকা ঘরগুলো থেকে একে একে বের করে আনেন আটকে পড়া ব্যক্তিদের। বন্ধুর বয়স্ক মাকে জ্বলন্ত ঘর থেকে বের করতে গিয়ে নিজেই গুরুতর দগ্ধ হন প্রেমকান্ত। তবে বিপদ শেষ হয়নি। প্রেমকান্ত নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মুসলিমদের বের করে আনলেও আর কেউই তাদের হাসপাতালে নিতে গাড়ি দেননি। অ্যাম্বুলেন্স ডাকা হয়েছিল, কিন্তু সেটিও পৌঁছায়নি।

প্রেমকান্তের শরীরের অন্তত ৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে। কিন্তু হাসপাতালে নেয়ার ব্যবস্থা করতে না পারায় সারারাত সেভাবেই বসে থাকতে হয়। পরিবারের সদস্যরা তাকে বাঁচানোর আশাও ছেড়ে দিয়েছিলেন। অবশেষে পরদিন সকালে কোনোরকমে স্থানীয় হাসপাতালে নেয়া হয় আহত প্রেমকান্তকে। তার চিকিৎসা চলছে, তবে জীবন এখনও সঙ্কটাপন্ন। এদিকে, দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত মুসলিমদের পাশে দাঁড়িয়েছে দিল্লির শিখ সম্প্রদায়ও। গৃহহীনদের জন্য তারা গুরদ্বারার (শিখদের প্রার্থনাস্থল) দরজা খুলে দিয়েছে। এছাড়া, মুসলিমদের পাশে দাঁড়িয়েছেন অশোকনগরের হিন্দুরাও। তারা ক্ষতিগ্রস্ত বেশ কয়েকটি মুসলিম পরিবারকে নিজেদের বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
ভ্রাতৃত্বের নজির রেখেছেন মুসলিমরাও। বুধবার হাতে হাত রেখে মানবশৃঙ্খল করে চাঁদবাগের একটি মন্দির ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করেছেন সেখানকার মুসলিমরা।

গত রোববার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) সমর্থক-বিরোধীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলেও ধীরে ধীরে এটি সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় রূপ নেয়। এতে প্রতিদিনই বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। বৃহস্পতিবারও অন্তত সাতজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে সেখানে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৪ জনে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও দুই শতাধিক মানুষ। সহিংসতার ঘটনার তিনদিন পর বুধবার এ বিষয়ে প্রথমবার মুখ খুলেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি সহিংসতাপূর্ণ এলাকায় শান্তি ও ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

সূত্র: ইন্ডিয়া টাইমস


সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল হাজারী।   ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: গোলাম কিবরীয়া হাজারী বিটু্।   প্রকাশক: মোঃ ইব্রাহিম পাটোয়ারী।
সহ সম্পাদক- রুবেল হাসান: ০১৮৩২৯৯২৪১২।  বার্তা সম্পাদক : জসীম উদ্দিন : ০১৭২৪১২৭৫১৬।  সার্কুলেশন ম্যানেজার : আরিফ হোসেন জয়, মোবাইল ঃ ০১৮৪০০৯৮৫২১।  রিপোর্টার: ইফাত হোসেন চৌধুরী: ০১৬৭৭১৫০২৮৭।  রিপোর্টার: নাসির উদ্দিন হাজারী পিটু: ০১৯৭৮৭৬৯৭৪৭।  মফস্বল সম্পাদক: রাসেল: মোবা:০১৭১১০৩২২৪৭   প্রকাশক কর্তৃক ফ্ল্যাট নং- এস-১, জেএমসি টাওয়ার, বাড়ি নং-১৮, রোড নং-১৩ (নতুন), সোবহানবাগ, ধানমন্ডি, ঢাকা থেকে প্রকাশিত এবং সিটি প্রেস, ইত্তেফাক ভবন, ১/আর কে মিশন রোড, ঢাকা-১২০৩ থেকে মুদ্রিত।  বার্তা, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ০২-৪১০২০০৬৪।  ই-মেইল : [email protected], web : www.hazarikapratidin.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি