শিরোনাম: |
জরাজীর্ণ বাড়িতে বসবাস করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা হামিদ
|
জেলা প্রতিনিধি ॥
বীরমুক্তিযোদ্ধা আঃ হামিদ। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে উজ্জিবিত হয়ে ঘরে বসে না থেকে বাঙ্গালী জাতীর মুক্তির সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েন। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হাত থেকে দেশ ও দেশের নিরীহ মানুষকে রক্ষা করতে ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসে ভারতের বোয়ালদা ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ নিতে যান। তৃতীয় ব্যাচে তিনি টেনিং নিয়ে দেশকে শত্রুমুক্ত করতে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন। সেই বীর মুক্তিযোদ্ধা আঃ হামিদের শরীরে বাসা বেধে মরণ ব্যাধী রোগ ক্যান্সার। সাথে অভাব-অনটনের মধ্যে বাস করছেন জড়াজীর্ণ বাড়িতে। ১২ হাজার টাকা ভাতা পেলেও স্বয়-সম্পত্তি ও আয়-রোজগারহীন আ: হামিদ চিকিৎসার খরচ চালাতে গিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। ধার দেনা করে ভারতে গিয়ে চিকিৎসা করালেও ক্যান্সার নিরাময়ের জন্য ব্যবহৃত ওষুধ কিনতে পারছেন না তিনি। তাই মৃত্যুর সাথে লড়াই করে কোনোমতে বেঁচে আছেন। গেরিলা যোদ্ধা আঃ হামিদ বগুড়া জেলার কাহালুর উলট্ট গ্রামে পরিবার নিয়ে জরাজীর্ণ মাটির ভাঙা বাড়িতে বসবাস করে আসছেন করছেন। ৪ পুত্র ও ২ মেয়ের বাবা তিনি। কোন রকম মেয়ে দুটোর বিয়ে দিয়েছেন। বড় ছেলে আরিফুল বেকার, ২য় ছেলে আশিকুল মাস্টার্স পাশ করে কাহালু মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল এন্ড স্কুলে বেতন ছাড়াই চাকরি করেন ও তৃতীয় ছেলে আসাদুজ্জামান দিনমজুরের কাজ করে এবং ছোট ছেলে আয়ুব আলী অনার্সে পড়ছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা আঃ হামিদের সাথে এই প্রতিবেদকের কথা হলে তিনি জানান, ১৯৫২ সালের ১২ জুন কাহালু উপজেলা সদরের উলট্ট গ্রামের জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ন্যাপ ছাত্র ইনিয়ন ও সিপিবি যৌথ্য গেরিলা বাহিনীর সদস্য হিসেবে ৭নং সেক্টরে নুরুল আনোয়ার বাদশা নেতৃত্বে পাঁচবিবি, জয়পুরহাট এলাকায় পাকিস্তানী বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করেছেন। এ সময় মুক্তিযোদ্ধা সনদপত্র ও মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় কতৃক প্রকাশিত গেজেটে লক্ষ্য করা গেছে মুক্তিবার্তা নং ০৩০৬১১০০৩৩ ও গেজেট নং ১৯১৮। কাহালু মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার নজিবর রহমান জানান, আঃ হামিদ একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। কোলকাতায় তিনি চিকিৎসা করতে গিয়েছিলেন। সেখানে ফুসেফুসে ক্যান্সার ধরা পড়েছ। ডাক্তার বলেছে প্রতি মাসে তাকে একটি ক্যামু দিতে হবে। সেই ক্যামুর দাম প্রায় ৬০ হাজার টাকা। টাকার অভাবে গত মাস থেকে ক্যামু দিতে পারেনি। এখন চিকিৎসা ও বাড়ি দুটোর’ই জরুরি প্রয়োজন বলেও জানান তিনি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাছুদুর রহমান জানান, তিনি আবেদন দিলে বাড়ির বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হবে। চিকিৎসার জন্য সমাজ সেবা অফিসের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। |