শিরোনাম: |
ভারী বর্ষণে ডুবল টেকনাফ, পাহাড় ধসে নিহত ৩
|
ভারী বর্ষণে সীমান্ত উপজেলা কক্সবাজারের টেকনাফের অধিকাংশ এলাকা ডুবে গেছে। সোমবার সকাল থেকে শুরু হয়ে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত চলা ভারী বর্ষণে উপজেলার অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজার হাজার পরিবার।
বর্ষণের ফলে পাহাড় ধসের ঘটনায় তিন শিশু নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অন্তত ১০ জন। মঙ্গলবার ভোরে টানা ভারী বর্ষণে এই পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ উপজেলা দুর্যোগ প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) কর্মকর্তা আবদুল মতিন। নিহতদের মধ্যে দুজন হলো টেকনাফের পুরানপল্লান পাড়ার মুহাম্মদ আলমের মেয়ে আফিয়া (৫) ও একই এলাকার রবিউল হাসানের ছেলে মেহেদী হাসান (১০)। আরেক শিশু আবদুল গফুরের ছেলে মো. খায়রুল চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। কোথাও হাঁটুপানি আবার কোথাও কোমর পানিতে ডুবে গেছে বেশিরভাগ এলাকা। সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে টেকনাফের হ্নীলা রংগীখালী, সাবরাং, শাহপরীরদ্বীপ এলাকা। প্রধান সড়কগুলোতে পানি ওঠায় দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। নিম্নাঞ্চল হিসেবে রংগীখালী লামারপাড়ার অবস্থা ভয়াবহ। সেখানকার বেশিরভাগ নিচতলার বাসা-বাড়ি পানি ঢুকে পড়ে। যার ফলে সেখানকার কেউ বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না। সহযোগিতা জন্যও কেউ প্লাবিত এলাকায় যেতে পারছে না। অনেক পরিবারে চরম দুর্ভোগ নেমে আসে। গতরাত থেকে আজ দুপুর পর্যন্ত অধিকাংশ বাড়িতে চুলায় আগুন পর্যন্ত ধরেনি। বন্ধ রয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। রংগীখালী লামারপাড়ার বাসিন্দা এনজিও কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘হঠাৎ এভাবে ভারী বর্ষণ হবে কল্পনাও করিনি। এবছর বর্ষার শুরুতে এই এলাকায় পানি উঠেনি। তাতে আমরা এলাকার মানুষ খুশিতে ছিলাম। কিন্তু বর্ষার শেষে আচমকা অবিরাম বর্ষণের ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমরা দ্রুত এ দুর্ভোগ থেকে পরিত্রাণের উপায় হিসেবে দেখছি একটি কার্যকরী স্লুইসগেইট।’ এদিকে প্লাবিত এলাকা হ্নীলা রংগীখালীর লামারপাড়ায় দুর্ভোগের খবর পেয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন হ্নীলা ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী। তিনি-ক্ষতিগ্রস্ত ঘর-বাড়ি পরিদর্শন করে বিভিন্ন অলি-গলি দেখে দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ^াস দেন। স্লুইস গেইটসহ টেকসই বেরিবাঁধ ও সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে কার্যকরী পদক্ষেপের কথা বলেন। টেকনাফ উপজেলা দুর্যোগ প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) কর্মকর্তা আবদুল মতিন ঢাকাটাইমসকে জানান, টেকনাফের পুরান পল্লান পাড়ার মুহাম্মদ আলমের ও রবিউল হাসান পাহাড়ের পাদদেশে বাড়ি করে বসবাস করে আসছিল। সোমবার থেকে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল। মঙ্গলবার ভোররাতে ভারী বর্ষণের ফলে তাদের বাড়ির উপর অংশে থাকা পাহাড়টি ধসে পড়ে। এতে দুই বাড়ির দুই শিশু মাটিচাপায় ঘটনাস্থলে মারা যায়। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রবিউল হাসান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ভারী বর্ষণে টেকনাফ উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম পানিবন্দি হয়ে আছে। ইতিমধ্যে কয়েকটি এলাকায় পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে তাদের সাহায্য দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, টানা ভারী বর্ষণে উপজেলার বেশির ভাগ নিচু এলাকা প্লাবিত হয়ে উপজেলা পৌরসভার বিভিন্ন এলাকার হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে সমস্যা আরও বাড়বে। |