শিরোনাম: |
অধ্যক্ষ বলল আমাকে শরীল দে, আমি তোকে প্রশ্ন দিব
হাজারিকা অনলাইন ডেস্ক
|
ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে রোববার (১৮ আগস্ট) চট্টগ্রাম সিআইডি পুলিশের হস্তলিপি বিশারদ শাখার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রনজিৎ সরকার।সাক্ষ্য দিয়েছেন। মূলত সাক্ষ্য দেওয়ার কথা ছিল সিআইডির হস্তলিপি বিশারদ শাখার সহকারী পুলিশ সুপার মো. শামসুল আলমের। তিনি হজ্বে থাকায় উপ-পরিদর্শক রনজিৎ সরকার সাক্ষ্য দেন। আদালতে তিনি বলেন, তিনি (মো.শামসুল আলম) অত্র মামলার হস্তলিপি বিশারদ হিসেবে এই মতামত দিয়েছেন। এ মতামতে তাঁর স্বাক্ষর আছে।
আদালতে সরকারী কৌসুলী (পিপি) হাফেজ আহম্মদ জানান, মৃত্যুর আগে দুই বান্ধবী তামান্না ও সাথীকে লেখা চিঠি ছিল নিম্নরুপ- অধ্যক্ষ নুসরাতকে বলেন, আমি তোকে পরীক্ষার প্রশ্ন দিব। মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাতের মৃত্যুর আগে তাঁর দুই বান্ধবী ও সহপাঠী তামান্না ও সাথীকে উদ্দেশ্য করে একটি চিঠি লিখে খাতার মধ্যে রেখে যান। তাঁর মৃত্যুর পর ওই চিঠি মামলার তদন্ত কর্মকর্তার হাতে পড়ে। চিঠিতে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দোলা কর্তৃক তার শ্লীলতাহানির বিষয়টি ফুটে ওঠে। চিঠিতে নুসরাত তাঁর বান্ধবীদের বলেন, তোরা অধ্যক্ষ সিরাজ সম্পর্কে সব জেনেও তাঁর মুক্তি দাবি করছিস। ওই দিন (২৭ মার্চ) উনি আমার কোন জায়গায় হাত দিছে এবং আরও কোন জায়গায় হাত দেওয়ার চেষ্টা করছে। উনি (অধ্যক্ষ) আমাকে বলেন, ‘নুসরাত ঢং করিস না, তুই প্রেম করিস না? ছেলের সাথে প্রেম করতে ভাল লাগে, ওরা তোকে কি দিতে পারবে? আমি তোকে পরীক্ষার প্রশ্ন দিব, আমি শুধু আমার শরীর দিতে হবে সিরাজকে। এর জবাবে আমি অধ্যক্ষকে বলেছি, আমি একটা নয়, হাজারটা ছেলের সাথে প্রেম করবো- আপনার সমস্যা কি? আমি লড়বো-শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত। আমি প্রথমে যে ভুলটা করেছি- সে ভূলটা দ্বিতীয়বার করতে যাওয়া মানে তো হেরে যাওয়া। আমি মরবো না-আমি বাঁচবো, আমি তাঁকে (অধ্যক্ষ) শাস্তি দিব। যে আমাকে কষ্ট দিয়েছে-আমি তাঁকে এমন শাস্তি দিব যে, যাকে দেখে অন্যরা শিক্ষা নিবে। আমি তাঁকে (অধ্যক্ষ) কঠিন থেকে কঠিন শাস্তি দিব ইনশাল্লাহ’। নুসরাতের এ চিঠি তাঁর হাতের লেখা কিনা সেটা যাচাইয়ের জন্য মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা থেকে নুসরাতের আগের পরীক্ষার খাতা সংগ্রহ করে। পরে তাঁর পরীক্ষার খাতা ও চিঠি চট্টগ্রামে সিআইডির হস্তলিপি বিশারদের কাছে পাঠিয়ে মতামত চাওয়া হয়। রোববার চট্টগ্রাম সিআইডির উপ-পরিদর্শক রনজিৎ সরকারসহ এ মামলা ৯২ জনের মধ্যে গতকাল পর্যন্ত ৮৫ জনের সাক্ষ্য ও জেরা শেষ হয়েছে। আগামীকাল সোমবার একই আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার কথা রয়েছে মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাতের মরদেহ ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসা কর্মকর্তা ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্লাষ্টিক সার্জারী ও বার্ণ ইউনিটের সহকারী রেজিষ্ট্রার মো. ওবায়দুল ইসলাম এবং নুসরাত হত্যা মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা (আইও)-পুলিশ পরিদর্শক মো. কামাল হোসেন। গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার প্রশাসনিক ভবনের (সাইক্লোন শেল্টার) ছাদে নিয়ে নুসরাতের হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে দেয় দুর্বৃত্তরা। এরপর দিয়াশলাই দিয়ে আগুন লাগিয়ে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। অগ্নিদদ্ধ ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। |