শুক্রবার, ২৯ মার্চ, 2০২4
নদীত সব ভাসি নিয়া গেইছে জীবনটা নিয়া পাড়ত উঠছি
Published : Wednesday, 17 July, 2019 at 8:32 PM

 জেলা প্রতিনিধি ॥
‘নদীত সব ভাসি নিয়া গেইছে। ঘরের কিছুই আটকাবার পাই নাই। খালি জীবনটা নিয়া পাড়ত উঠছি। কোনটে থাকমো এলা। হামার থাকির জায়গা নাই।’ এ ভাবেই কান্নাজড়িত কন্ঠে কথাগুলো বলছিলেন লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার পাটিকাপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব হলদিবাড়ি গ্রামের রহমত আলীর স্ত্রী ছকিনা বেগম (৩৫)।
ওই গ্রামের হাসিনা বেওয়া (৬০) তিস্তা নদীতে ঘরবাড়ি হারিয়ে পারুলিয়া তিস্তা নদীর ঘাটে ঘুরছিলেন। সংবাদের খোঁজে এই প্রতিবেদক পারুলিয়ার নদীর ঘাটে গেলে তিনি বলেন, ‘বাবা মোর ঘরটাও নদীত ভাসি গেইছে। মোর নামটাও নেখেন। মুই খুব অসহায় বাবা।’ লালমনিরহাটে তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ ভাঙন। গত পাঁচ দিনে তিস্তা ও ধরলার ভাঙনে ৫ শতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। ভাঙনে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন তিস্তা ও ধরলা পাড়ের হাজারও মানুষ। পরিবারগুলো গৃহহীন হয়ে বাঁধের রাস্তা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়ে দুর্বিষহ জীবন-যাপন করছে। এদিকে কয়েক দিনের পানি বৃদ্ধির ফলে তিস্তার ভাঙনে বসতভিটা-ফসলি জমি বিলীন হয়ে নিঃস্ব ও সর্বশান্ত হয়ে পড়ছে নদী তীরবর্তী মানুষ। মাথা গোঁজার মতো এক টুকরো জমি না থাকায় ভাঙনকবলিতরা খোলা আকাশ মানবেতর জীবনযাপন করছেন। লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের একমাত্র পাকা সড়কটি পানির তোড়ে ভেঙে গিয়ে পাঁচদিন ধরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। হাতীবান্ধা উপজেলার পাটিকাপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম হলদিবাড়ি গ্রামের নয়ারহাট নামে একটি বাজার মঙ্গলবার রাতে তিস্তার গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার জোংড়া ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের আঞ্চলিক সড়কে অবস্থিত সেতুটির সংযোগ সড়ক ধসে যাওয়ায় প্রায় ২০ হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। স্থানীয়রা জানান, গত সোমবার রাতে পার্শ্ববর্তী ধরলা নদীর বন্যার পানির চাপে (তোড়ে) সেতুটির সংযোগ সড়কটি ধসে যায়। এর ফলে সেতুটির পূর্ব ও পশ্চিম উভয় দিকে ধবলগুড়ি, নন্দেরঘাট, ডাঙ্গাপাড়া, বড়ভিটা, মন্ডলেরটারী, মন্দিরপাড়া গ্রামের প্রায় ২০ হাজার গ্রামবাসী চরম দুর্ভোগে পড়েন। ওই সব গ্রামের স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতে সমস্যায় পড়েছে। কৃষক ও ব্যবসায়ীরা তাদের কৃষি পণ্য নৌকায় করে পারাপার করছে। জোংড়া ন্যাশনাল উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী জুঁই খাতুন ও লিপছি আক্তার বলেন, সেতুর সংযোগ সড়কটি ভেঙে যাওয়ায় আমাদের বিদ্যালয়ে যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে। আমরা নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে যাতায়ত করছি।
জোংড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফ আলী মানুষের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন, দ্রুত ভেঙে যাওয়া সেতুটির সংযোগ রাস্তাটি দিয়ে মানুষের চলাচলের জন্য বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে দেয়া হবে।
পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল করিম বলেন, বন্যায় সেতু সংযোগের রাস্তা ভেঙে যাওয়া ও স্থানীয় লোকজনের সমস্যার কথা জানতে পেরে ঘটনাস্থল ঘুরে এসেছি। রাস্তাটি দ্রুত মেরামত করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। 
আরও খবর


সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল হাজারী।   ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: গোলাম কিবরীয়া হাজারী বিটু্।   প্রকাশক: মোঃ ইব্রাহিম পাটোয়ারী।
সহ সম্পাদক- রুবেল হাসান: ০১৮৩২৯৯২৪১২।  বার্তা সম্পাদক : জসীম উদ্দিন : ০১৭২৪১২৭৫১৬।  সার্কুলেশন ম্যানেজার : আরিফ হোসেন জয়, মোবাইল ঃ ০১৮৪০০৯৮৫২১।  রিপোর্টার: ইফাত হোসেন চৌধুরী: ০১৬৭৭১৫০২৮৭।  রিপোর্টার: নাসির উদ্দিন হাজারী পিটু: ০১৯৭৮৭৬৯৭৪৭।  মফস্বল সম্পাদক: রাসেল: মোবা:০১৭১১০৩২২৪৭   প্রকাশক কর্তৃক ফ্ল্যাট নং- এস-১, জেএমসি টাওয়ার, বাড়ি নং-১৮, রোড নং-১৩ (নতুন), সোবহানবাগ, ধানমন্ডি, ঢাকা থেকে প্রকাশিত এবং সিটি প্রেস, ইত্তেফাক ভবন, ১/আর কে মিশন রোড, ঢাকা-১২০৩ থেকে মুদ্রিত।  বার্তা, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ০২-৪১০২০০৬৪।  ই-মেইল : [email protected], web : www.hazarikapratidin.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি