শুক্রবার, ২৯ মার্চ, 2০২4
খেলাপিদের বিশেষ সুবিধা কার্যকরের নির্দেশ
হাজারিকা অনলাইন ডেস্ক
Published : Friday, 12 July, 2019 at 9:46 AM

খেলাপিদের দুই শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ৯ শতাংশ সুদহারে ঋণ পুনঃতফসিলের বিশেষ সুবিধা কার্যকরের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এর আগে বিষয়টির ওপর দ্বিতীয় দফা স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এ আদেশ দুই মাসের জন্য স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্দেশনা দিয়েছে ব্যাংক নিয়ন্ত্রণকারী এ সংস্থাটি। নির্দেশনার ফলে আগামী দুই মাস ঋণ পুনঃতফসিল সুবিধা নিতে পারবেন খেলাপিরা। তবে এ সময় নতুন কোনো ঋণ নিতে পারবেন না তারা।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) ঋণ পুনঃতফিসল ও এককালীন এক্সিট সংক্রান্ত বিশেষ নীতিমালা কার্যকরের নির্দেশনা দিয়ে সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংকের 'ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ'। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো সার্কুলারে বলা হয়, বিআরপিডি সার্কুলার নং-৫, তারিখ ১৬ মে ২০১৯ এর ওপর হাইকোর্ট ডিভিশন কর্তৃক জারিকৃত স্থিতাবস্থার ওপর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ গত ৮ জুলাই ২ মাসের জন্য স্থগিতাদেশ দেন। ওই আদেশের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে আপনাদের পরামর্শ দেয়া হলো।

এর আগে ১৬ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে ঋণ পুনঃতফসিল ও এককালীন এক্সিট সংক্রান্ত বিশেষ নীতিমালা জারি করা হয়। এতে মাত্র দুই শতাংশ ডাউন পেমেন্টে ৯ শতাংশ সরল সুদে এক বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ টানা ১০ বছর ঋণ পরিশোধের সুযোগ দেয়া হয়।  নিয়ে বিভিন্ন মহলের নিন্দা ও তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এরপর গত মঙ্গলবার ওই সার্কুলারের স্থগিতাদেশ চেয়ে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ আদালতে রিট করে। ওই রিটের শুনানি করে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই সার্কুলারের ওপর এক মাসের স্থিতাবস্থা দেন, যা ২৪ জুন (সোমবার) পর্যন্ত এ স্থিতাবস্থা বহাল ছিল।

এরপর ২৪ জুন পুনরায় এ বিষয়ে শুনানিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশেষ সুবিধার ওপর আরও দুই মাস স্থিতাবস্থা দেন হাইকোর্ট। এরপর গত ৮ জুলাই হাইকোর্টের ওই আদেশ দুই মাসের জন্য স্থগিত করেন আপিল বিভাগ। তবে এ সময়ে ওই নীতিমালার সুবিধাভোগীরা নতুন করে ঋণ নিতে পারবেন না বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত। অর্থাৎ, আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রজ্ঞাপনের সুবিধাভোগী ঋণ খেলাপিরা দুই মাস কোনো ঋণ পাবেন না। উচ্চ আদালতের প্রেক্ষিতে ১১ জুলাই এ নির্দেশনা দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। জানা গেছে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে ঋণ খেলাপিদের সুবিধা দিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ১৬ মে ‘ঋণ পুনঃতফসিল ও এককালীন এক্সিট সংক্রান্ত বিশেষ নীতিমালা’ শীর্ষক সার্কুলার জারি করে। এতে বলা হয়, বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কারণে ব্যবসায়ী/শিল্পোদ্যোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ব্যাংকের ঋণ অনেক ক্ষেত্রেই নিয়মিতভাবে পরিশোধিত হচ্ছে না এবং সংশ্লিষ্ট ঋণ বিরূপভাবে শ্রেণিকৃত হওয়ায় ঋণ বিতরণ ও আদায় কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে উৎপাদনশীল খাতসহ অন্য খাতে স্বাভাবিক ঋণ প্রবাহ বজায় রাখাসহ ব্যাংক খাত বিরূপভাবে শ্রেণিকৃত ঋণ নিয়মিত আদায়ের লক্ষ্যে কতিপয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

এতে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরভিত্তিক ঋণ খেলাপিরা সুযোগ পাবেন। ছাড় গ্রহণের জন্য ৯০ দিনের মধ্যে অর্থাৎ ১৬ আগস্টের মধ্যে খেলাপির আবেদন করবেন। ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে আগামী ১০ বছর পর্যন্ত ঋণ পরিশোধের সুযোগ পাবেন। তবে প্রথম এক বছর কোনো টাকা পরিশোধ করতে হবে না। পুনঃতফসিলকৃত ঋণের সুদহার হবে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ বা ব্যাংকের কস্ট ফান্ডের সঙ্গে ৩ শতাংশ যোগ করে।
খেলাপি ঋণের সুদ ব্যাংক আয় দেখাতে পারে না। পৃথক হিসাবে রাখতে হয়। পৃথক হিসাবে রাখা সব সুদ মাফ করে দেয়া হবে। এ সুবিধা গ্রহণকারীরা ব্যাংক থেকে আবার নতুন করে ঋণ নিতে পারবেন। প্রচলিত নিয়ম মেনে সতর্কতার সঙ্গে ঋণ দিতে বলা হয়েছে। নতুন ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করলে পুনঃতফসিল সুবিধা বাতিল হবে।

সুবিধা গ্রহণের পর নিয়মিত অর্থ পরিশোধ না করলেও তাদের খেলাপি করা যাবে না। এখানে ছাড় দেয়া হয়েছে। ৯টি মাসিক কিস্তির ৩টি এবং ত্রৈমাসিক ৩ কিস্তির একটি পরিশোধ না করলেও নিয়মিত থাকা যাবে। তবে মাসিক কিস্তির মধ্যে ৬টি ও ত্রৈমাসিক কিস্তির ২টি পরিশোধ না করলে পুনঃতফসিল সুবিধা বাতিল করা হবে। স্বাধীনতার পর থেকে যারা ঋণ খেলাপি তাদের এককালীন এক্সিট সুবিধা দেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে তাদের খেলাপি ঋণের হিসাব হবে ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বরের এককালীন হিসাবায়ন ভিত্তিতে। অর্থাৎ ১৯৭১ সালের পর থেকে ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত যত খেলাপি ঋণ আছে তার হিসাব করা হবে। কোনো ঋণ খেলাপি যদি মনে করে এককালীন ঋণ পরিশোধ করে খেলাপির তালিকা থেকে বেরিয়ে যাবেন, তাহলে সে ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে সার্কুলারে। এতে বলা হয়েছে, ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে ঋণ খেলাপিরা ঋণ পরিশোধের জন্য এক বছর পর্যন্ত সময় পাবেন। আগের সব সুদবাবদ পাওনা মওকুফ করা হবে। এককালীন পরিশোধের জন্য সুদহার আরও কম- ব্যাংকের কস্ট অব ফান্ডের সমান। তবে এক বছরের মধ্যে টাকা পরিশোধ না করলে সুবিধা বাতিল হবে। এককালীন এক্সিট সুবিধা ও পুনঃতফসিল সুবিধা কার্যকরের ৯০ দিনের মধ্যে ব্যাংক ও গ্রাহকের মামলা স্থগিত করতে হবে। পরবর্তীতে গ্রাহক কোনো শর্ত ভঙ্গ করলে সুবিধা বাতিল করে মামলা পুনরায় চালু হবে।


সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল হাজারী।   ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: গোলাম কিবরীয়া হাজারী বিটু্।   প্রকাশক: মোঃ ইব্রাহিম পাটোয়ারী।
সহ সম্পাদক- রুবেল হাসান: ০১৮৩২৯৯২৪১২।  বার্তা সম্পাদক : জসীম উদ্দিন : ০১৭২৪১২৭৫১৬।  সার্কুলেশন ম্যানেজার : আরিফ হোসেন জয়, মোবাইল ঃ ০১৮৪০০৯৮৫২১।  রিপোর্টার: ইফাত হোসেন চৌধুরী: ০১৬৭৭১৫০২৮৭।  রিপোর্টার: নাসির উদ্দিন হাজারী পিটু: ০১৯৭৮৭৬৯৭৪৭।  মফস্বল সম্পাদক: রাসেল: মোবা:০১৭১১০৩২২৪৭   প্রকাশক কর্তৃক ফ্ল্যাট নং- এস-১, জেএমসি টাওয়ার, বাড়ি নং-১৮, রোড নং-১৩ (নতুন), সোবহানবাগ, ধানমন্ডি, ঢাকা থেকে প্রকাশিত এবং সিটি প্রেস, ইত্তেফাক ভবন, ১/আর কে মিশন রোড, ঢাকা-১২০৩ থেকে মুদ্রিত।  বার্তা, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ০২-৪১০২০০৬৪।  ই-মেইল : [email protected], web : www.hazarikapratidin.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি