শুক্রবার, ২৯ মার্চ, 2০২4
ফেসবুক লাইভে হাজারীর ভাষণ (১৫ই ফেব্রুয়ারী ২০১৭)
হাজারিকা ডেস্ক॥
Published : Saturday, 18 February, 2017 at 10:26 PM, Update: 20.02.2017 11:37:23 AM

আসসালামু আলাইকুম। বন্ধুগণ আজ ১৫ই ফেব্রুয়ারী । এটা হচ্ছে ভাষা আন্দোলনের মাস। ৫২ সনের ভাষার জন্যে আন্দোলন হয়েছিল এবং সে আন্দোলনে অনেক মানুষ শহীদ হয়েছিল। এবং তারা শহীদ হয়েছিল বলেই বাংলা ভাষাটা পৃথিবীর বুকে টিকে গেছে। আমি আজকে আমার ভাষণ দেয়ার এই মুহূর্তে আমি সবার আগে সেই ভাষা শহীদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। একই সঙ্গে যেই সূত্র ধরে যে স্বাধীনতার সংগ্রাম আসছে এবং স্বাধীনতার সংগ্রাম ও স্বাধীনতার যুদ্ধ করে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের স্মরণ করছি। বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করছি। আমি ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস, ভাষা আন্দোলনের প্রোক্ষাপট বা পটভূমি কোনো কিছুর দিকে যেতে চাই না। বছরের পর বছর এসবের ওপর আলোচনা হয়। এবং আমার ধারণা আমাদের গৌরব উজ্জ্বল অন্যান্য দিনের চাইতে ২১ ফেব্রুয়ারী বা ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসটা  আমাদের জাতি ভালো করে পরিষ্কার করে জানে। এখন আমি শুধু আমার ফেনী অঞ্চলে আমার কিছু কাজের রেকর্ডটা রেখে এখানে বলে  আমি প্রসঙ্গটা শেষ করব। আমি করেছি, আমরা ক্ষমতায় থাকাকালে দুএকটা উল্লেখযোগ্য কাজ করেছি। কিন্তু যখন ২১শে ফেব্রুয়ারী আসে যখন ফেনীর বুদ্ধিজীবিরা,সাংবাদিক বন্ধুরা অন্যান্যরা ও রাজনীতিবিধরা আলোচনায় অংশ নেন। এমন কি সাক্ষাৎকার দেয় টেলিভিশনে ,তারা কিন্তু পারত পক্ষে আমার অবদানটুকু স্বীকার করে না। করুক বা না করুক।  আমি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যে এগুলো রেকর্ড করে রেখে যেতে চাই। যেমন এক নম্বর হচ্ছে, আমি লক্ষণপুর গ্রামকে মাদকুইয়া ইউনিয়নের অর্থাৎ দাগনভুঁইয়া থানার লক্ষণপুর গ্রামকে ছালামনগর নামকরন করেছি। অনেক কষ্ট করে, অনেক রেকর্ড পত্র ওলটপালট করে, বিভিন্ন জায়গায় দৌড়াদৌড়ি করে নামটাকে ছালামনগর করেছি। তখন আমাদের হেডমাস্টার সাহেব তখনকার মতোভুইয়ার চেয়ারম্যান বদির আমাকে সহযোগিতা করেছে।  এবং এটা খুবই প্রয়োজন ছিল ,এটায় আমি উদ্দোগ না নিলে হয়তো কখনো কেউ কিছু করতো কি না জানি না। এরপরে সেখানেই আমি একটা স্মৃতিসৌধ করেছি। ছালামনগর মানেই লক্ষণপুর, মানে ছালমের জন্মস্থান। ছালাম আমাদের ভাষা শহীদের একজন। এটা ফেনীবাসীর জন্যে আমাদের সকলের জন্যে গৌরবের বিষয়। এরপরে আমি ফেনী স্টেডিয়ামকে ছালাম স্টেডিয়াম করেছি। এটা ভুলে যাওয়ার কোনো কারণ নাই। হাজার হাজার লোক নিয়ে প্রশাসনের লোক নিয়ে এটা আমি অনুষ্ঠানিকভাবে করেছি। এটা ইতিহাসের নজিরবিহীন ঘটনা,২০০১ সালে আওয়ামী লীগ পতনের পর বা আওয়ামী লীগ পরাজয়ের পর বিএনপি এসেই ছালামের নামের স্টেডিয়ামটি আবার ফেনী স্টেডিয়ামে রূপারিত করে। ছালামের নামটি বাদ দেয়। পরে সমালোচনার মুখে বা বিরূপ প্রতিক্রিয়ার কারণে বিএনপি সরকারই আবার ২০০৩ সালে সালাম স্টেডিয়ামকে ছালাম স্টেডিয়ামকে রূপারিত করেছে। এখন যে সালাম কমিউনিটি সেন্টারটি আছে সোনালি ব্যাংকের সামনে জেলা পরিষধের । এটাও আমি নামকরণ করেছি উদ্যোগ নিয়েছি। আর ছালামের নামের বা ছালামের যে ছবিটি পত্রিকায় আপনারা  দেখেন,তা ঠিক আসলে সরাসরি এটা ছালামের ছবি নয়। এটা ছালামের ভাইয়ের ছবি। তার ভাইকে আমার ঘরে ডেকে এনে বসিয়ে রেখে একজন কথিতদশা শিল্পীদিয়ে আর্ট করিয়ে একটি  রেপরিকা তৈরি করেছিলাম, সেই রেপরিকায় যেহেতু ছালামের কোনো ছবি পাওয়া যায় নাই। সেই রেপরিকাটাই এখন ছালামের ছবি হিসেবে প্রচারিত হয়। এটাও আমি করেছিলাম। এখন যেটা দুর্ভাগ্যজনক কথা আমি উল্লেখ না করে পারছি না, বলতে বলতে বিরক্ত হয়ে গেছি। একবার এসব বলতে গিয়ে আমার পত্রিকা বন্ধ হয়ে গেছে ফেনীতে। এখন আবার বলতে গিয়ে কি হয় জানি না। হোক, না হলে মৃত্যুর বেশি তো আর কিছু হবে না। সেটা হচ্ছে কয়দিন আগে এখনো সংস্কার কাজ ফেনী শহীদ মিনারে শেষ হয় নাই। এই শহীদ মিনার কিন্তু খাজা আহম্মদ সাহেব ৫২ সনে ভাষা আন্দোলন হয়েছে ৫৪ সনে ফেনীর এই শহীদ মিনার খাজা সাহেব করেছে। সেই হিসেবে খাজা সাহেবই এটার উদ্যোগক্তা খাজা সাহেবই  প্রতিষ্ঠাতা এটার উদ্বোধক সবকিছু। কিন্তু খাজা সাহেব তার নামের কোনো নেমপ্লেটেই রাখেনি কোনো কিছু করে নাই। কিন্তু আমরা জানি এটার ইতিহাস যে খাজা সাহেবই প্রতিষ্ঠাতা। আশে পাশে অনেক দোকানপাট জঙ্গল ছিল আস্তে  আস্তে সব পরিষ্কার হয়ে গেছে। এখন কয়দিন আগে শহীদ মিনারকে সংস্কার করা হয়েছে। সেই সংস্কার করা শহীদ মিনারকে সংস্কার কাজের উদ্বোধন না হলে শহীদ মিনার উদ্বোধন করেছে বলে আলাউদ্দিন নাসিমমের একটা ফলক লাগানো হয়েছে। এটা দুর্ভাগ্যেজনক। যেহেতু আলাউদ্দিন নাসিমের তখন জন্মই হয় নাই।  এছাড়া আপনারা জানেন, যে ঢাকাতে যে শহীদ  মিনার।  এই শহীদ মিনারটি যুদ্ধের সময় ওরা গুড়িয়ে দিয়েছিল। পরে নতুন করে করা হয়েছে বার বার এটার ওপর আঘাত এসেছে। আবার এটা গড়েছে। শহীদ মিনার এখন যে অবস্থায় আছে শুরু থেকে কত প্রধানমন্ত্রি,কত রাষ্ট্রপতি কতকিছু কত জন গেছে এসেছে কিন্তু কারো নাম ঢাকা শহীদ মিনারের গায়ে লেখা নাই । ইচ্ছা করলে যে কেউ এমনকি বঙ্গবন্ধু এই শহীদ মিনারে তার নাম লেখান নাই। কারো নাম নাই, এখনো নাই। যেখানে ঢাকা শহীদ মিনার মূল জায়গায় যেখানে লোক মারও গেছিল সেই শহীদ মিনারের উদ্বোধনের সুযোগ নাই, প্রশ্ন নাই। আবার ফেনীতে যার ভাষা আন্দোলনের সময় জন্মেই হয় নাই ,তাকে দিয়ে উদ্বোধন করানো এটা দুর্ভাগ্যজনক কিনা ফেনীবাসিকে আমি বিবেচনায় রাখতে বলল। হতে পারে এমন কি যদি এটা একে বারেই করতেই হয়,একজন মুক্তিযোদ্ধা,একজন শিল্পী, একজন সাহিত্যিক ,একজন যেমন ভাষা আন্দোলনের গফফার চৌধুরী সাহেব আছেন, নির্মেলেন্দু গুণ হয়তো তাদেরকে বললে হয়তো তারা এসেও এটা সংস্কার কাজের উদ্বোধন করতেন। মানানসই হচ্ছে তারা যদি করতে কিন্তু নাসিমকে দিয়ে করানো একে বারেই হয় না। বেনানন হয়েছে বলে আমি মনে করি। এটা উচিত হয় নাই।
এখন আমি এসব প্রসঙ্গ বাদ দিয়ে এবার এ মাসেই এক বিবেচনায় রাজনৈতিক বিবেচনায় আমাদের রাজনৈতিক এ মাসে আমাদের ফেনী অঞ্চলের বেশ কিছু মানুষ ইন্তেকাল করেছে এমন কি আমার একজন প্রিয় মানুষও ইন্তেকাল করেছে আমি তাদের শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করছি। একজন হচ্ছে সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত। এই সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত তিনি আমি যখন ৮৭ সনে গ্রেফতার ছিলাম তখন আমার মুক্তির জন্য সংসদে যে ভূমিকা নিয়েছিলেন তা কোনো দিন ভুলতে পারব না । সেজন্যে আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞ। এবং তার মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। এরপরে আমাদের খুবই পুরনো নিবেদিত প্রাণ আওয়ামী লীগের । অনেক ত্যাগী মানুষ সুজাত আলী নিন্ধুরপুরে মৃত্যুবরন  করেন। প্রায় ৯০ বছর বয়স হয়ছে। পরিণত বয়সেই কিন্তু তার মতো ত্যাগী নির্লোভ মানুষ এই সমাজে ভবিষ্যৎতে দেখা যাবে কিনা বলা মুশকিল । তাকে ও আমি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি,করতেই চাই। আমি যেতে পারিনি তার জানাজায়। এর পরে আমাদের ছাগলনাইয়ার দীর্ঘদিনের সভাপতি  ফয়েজ আহম্মেদ। এই ফয়েজ আহম্মেদকে আমি প্রথম ছাত্রলীগের আহবায়ক করে এসেছিলাম ছাঁগলনাইয়ায় ৬৬ সনে। তখন কোনো এক কারণে, যেদিন তাকে আমি আহবায়ক করে এসেছিলাম একটি হিন্দু রেস্টুরেন্টে বসে। সেদিন আমরা দুতিন জন ফেনী থেকে নেত্রীস্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা আমি ছিলাম মহাকুমা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক আমরা গিয়ে পায়ে হেঁটে গিয়েছিলাম। ফেনী গুদাম কোয়ার্টার থেকে ছাগলনাইয়ার ওই হিন্দু রেস্টুরেন্ট পর্যন্ত পায়ে হেঁটে গিয়েছিলাম আবার পায়ে হেটে এসেছিলাম। এখনকার নেতাকর্মীরা হয়তো কল্পোনাও করতে পারবেনা। গিয়ে ফয়েজকে আমি ছাত্রলীগের আহবায়ক করেছিলাম থানা ছাত্রলীগের। ফয়েজ দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিল। দীর্ঘদিন অনেক জেল খেটেছে অনেক মামলায় খেটেছেন, বিএনপি এবং জাতীয় পার্টির অনেক লাঞ্ছনা গঞ্ছনার স্বীকার হয়েছেন। এই ফয়েজে আমি গর্বিত যে, ফয়েজের জানাজায় স্মরণকালের ইতিহাসের সবচাইতে বেশি মানুষ জড়ো হয়েছিল। সেই জানাজায় কেউ কেউ বলছে এবং আমি বিশ্বাস করি ফয়েজের জানাজায় যতো লোক হয়েছে। সাম্প্রতিকালের ফেনীর ইতিহাসে এতো লোক কেউ কোনো জানাজায় দেখে নাই হতে পারে আমি বিশ্বাস করি। যদিও আমি তার জানাজায় থাকতে পারিনি। একটি বিরক্তিকর বিষয় এই লোকটার জানাজাটাকে দীর্ষক্ষণ বিলম্বিত করা হয়েছে। লাশ সামনে রেখে বক্তিতা করা রাজনৈতিক কথা বলা এর চাইতে খারাপ কিছু নাই। অথচ বিগত পাঁচ সাত বছর ফয়েজকে সবকিছু থেকে বঞ্চিত করেছে। তারাই আজ ফয়েজের লাশ সামনে রেখে অসংখ্য মিথ্যার ফুলঝুঁড়ি কান্নাকাটি তারাই তাদের জন্যই হয়তো ফয়েজ কিছুটা অকালে মৃত্যু বরণ করেছে। দুর্ভাগ্যজনক আমি ভবিষৎতে লাশ সামনে রেখে এই বক্তৃতার এই টেডিশনটা বন্ধ করতে সকলকে অনুরোধ করব। আমি জানি, মানুষ বিরক্ত হয়েছে। জানাজা পড়তে এসে এক ঘন্টা দের ঘন্টা পড়ে অনেক লোক ফিরেও গেছে এটা হওয়া উচিত নয়। এটা বন্ধ করতে হবে। এরপরে আমারই সহকর্মী যুদ্ধের সময় নয় মাসের প্রায় ছয় এক সাথে ছিলাম বলা যায়। সেই আজু ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়েছিল। আমি আপনাদের আগেই দোয়া করতে বলেছিলাম। সেই আজুরও মৃত্যু বরণ করেছে। আমি এদের সকলের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। একে একে তাদের সকলের আমি জীবনের ওপর আলোচনা করার এই মুহূর্তে সুযোগ নাই। সেই জন্যে করতে পারলাম না।
এবার  আমি শুনেছি আগামিকাল থেকে আমার ফেনী অঞ্চলে বিশ্ব ইজতেমা শুরু হচ্ছে। খুশির খবর, আনন্দের খবর। আমি খুব আনন্দিত। এই ইজতেমায় আমি সকল ইস্তরের মানুষকে আহ্বান করবো অনুরোধ করব। সকলে মিলে সহযোগিতা করুন। যাতে এতোটা সুন্দর ও সুশৃঙ্খল হয়। এমনকি আমার মেলায় মধ্যে আমি দশ এমন বছর করেছি কোনো টুশব্দ  কোথাও হয়নি। তার চাইতেও শুশৃঙ্খল যাতে হয় অনেক বড় কর্মযোগ্য । এখানে দশ লক্ষ মানুষের আসা যাওয়া খাওয়া থাকা তাদের পায়খান প্রসাবের ব্যবস্থা করা অনেক বড় ব্যাপার। এসবে যাতে বিশৃঙ্খলা যাতে না হয়, আমি সকলকে সহযোগিতা করে নিজেরা কায়িক পরিশ্রম করে নিজেরা গিয়ে সবকিছু সুন্দরভাবে করুন। আমি তাদের সাফল্য কামনা করি। এখানে আমি শুনেছি, কেউ কেউ সহযোগিতা করছে। আমি শুনেছি আলাউদ্দিনও সহযোগিতা করছে। তাকে আমি বলবো, মেয়র হওয়ার জন্যে বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হয়ে কোটি কোটি টাকা ওদের পায়ে ঢালছো । সেটা না করে কিছু টাকা এখানে ঢালো। আমার মনে আছে আপনাদের ও মনে থাকতে পারে, আমি সংসদ সদস্য থাকাকালে এক ভাষণে বলেছিলাম, আমার ফেনী অঞ্চলে এ বছরের যা বরাদ্দ পুরোটাই টঙ্গি বিশ্ব ইজতেমার সংস্কার কাজের জন্যে বরাদ্দ দিয়ে দেন। আমাদের কারো কোনো আপত্তি নাই। যদিও সেটা হয় নাই তবুও আমি পরিষ্কারভাবে ঘোষণা দিয়েছিলাম, আমরা এবার আমাদের ফেনী অঞ্চলের কোনো উন্নয়ন চাই না। আমরা চাই,ওই টঙ্গির ওখানে যেন, মুসল্লিদের কোনো কষ্ট না হয়। সেটা লাঘবের জন্যে আমার টাকা বরাদ্দ করা হোক। এই মুহূর্তে আমার একটা প্রস্তাব আছে টঙ্গির ইজতেমা নিয়ে, সেটা হচ্ছে। মনে রাখবেন, টঙ্গির এই ইজতেমাকে নিয়েই ফেনীর যে বদনাম আছে কিছু কেটে যাবে। যদি আমরা সেটা ঠিকমতো করতে পারি। সেটা হচ্ছে, ফেনীর ইজতেমা যেখানে হচ্ছে, কেউ কেউ বলছেন, এটা দেবীপুরে ইজতেমা হবে। আমি বলি, ইজতেমা নামটা নেয়ার আগে দেবীপুর-দেবী মানে হিন্দুদের দেবী। নামটি উচ্চারণ ঠিক নয়। সেই জন্যে আমি যেই রকম ছালামনগর করেছি লক্ষণপুরের নাম বদল করে। এই দেবীপুরের নামটাও বদল করে এই উপলক্ষ্যে আমার প্রস্তাব হয় এটাকে ফেনীর ইজতেমা নগরী কিংবা ফেনী ইজতেমাপুর অথবা কাজী সমশের কাজীর নামে কিংবা আমাদের মুক্তিযোদ্ধ শহীদ ছালাউদ্দিন মমতাজের নামে ,মমতাজের বাড়ি তারই পাশে করা হোক। এটা আমার প্রস্তাব আমি আশা করি, এই প্রস্তাবটি করলে এটা যদি বাস্তবায়িত করা হয়,সকলের জন্যে গৌরবের। আমার বাড়ি সৌসাধি ইউনিয়ানে। এখন বলবেন,ব্যাপার কি। আগে বললেন, ধর্মপুর এখন বললেন সৌসাধী। এখন ধর্মপুরেই আমার বাবদাদার জন্ম যখন তখন ওই ধর্মপুর পুরোটাই সৌসাধীতে ছিল। আইয়ুব আমলে ৫৮ সালে ধর্মপুরকে সৌসাধী থেকে আলাদা করা হয়েছে। সুতারাং আমার বাব দাদার জন্ম ওই সৌসাধীতেই সুতারাং এটা আমার জন্মভূমি বিটাতেই হচ্ছে এটা আমার জন্যে গৌরবের বিষয় বলে আমি মনে করি। যাইহোক আমি আশা করি আমার এই প্রস্তাবটি সাদরে গৃহিত হবে। জনপ্রতিনিধিদের আমাদের সকল ধর্মীয় অনুষ্ঠানের দেকভাল করা কিন্তু দায়িত্ব। আপনি আমি যখন যারাই জনপ্রতিনিধি হবো। তার দায়িত্ব সে যে ধর্মেরই হোক, হিন্দু ধর্মেরই হোক বা খ্রিষ্টান ধর্মেরই হোক তার ধর্ম পালনে সহযোগিতা করার দায়িত্ব। কেউ কেউ হয়তো ভাববেন, আমি বোধ হয় সমালোচনা করছি কিন্তু না। নিজাম এই মুহূর্তে যেভাবেই হোক আমাদের ফেনী অঞ্চলের এমপি। সে এমপি হিসেবে এই ইজতেমা যে হচ্ছে হবে সে যানে। ইজতেমার সময়টা পার করে বিদেশে যাওয়া উচিত ছিল। কারণ তার এখানে দায়িত্ব ছিল। তাকে দেখতে হবে। এখানে ভাল মন্দ দায় দায়িত্ব তার ছিল। কিন্তু তার দায়িত্ব টা পালন না করে বাইরে কি দায়িত্ব পালন করতে গেছে আমি জানি না। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনেকরি এর চাইতে বড় দায়িত্ব আর কিছু ছিল না। সুতারাং আমি মনে করি সে গিয়ে  ঠিক করে নাই।
এবার আমি সমসায়িককালের ছোটবড় ুদ্র অুদ্র কিছু প্রসঙ্গ টানতে চাই। কেউ ভাল মনে করবে আবার কেউ ভাল মনে নাও করতে পারেন। এগুলো ফেনীর তলানীয় বিষয়। একটা হচ্ছে কয়দিন আগে হঠাৎ শুনলাম কে বা কারা যেন রেন্সু করিমকে মেরে ফেলতে চাইল। রেন্সু করিমকে মেরে ফেলতে চাইল তার প্রতিবাদ হইলো, প্রতিবাদ সভা হইলো। ঢাক-ঢোল পিটিয়ে কতো কিছু। এই রেন্সু করিম কিন্তু এর আগেও দুই বার আমার ক্ষমতার থাকামলে বলেছে কে বা কারা তাকে অকারণে মেরে ফেলতে চেয়েছে। এসব কথা বলে, আমির হোসেন ভেলা এদের পুরো পরিবারটাকে শেষ করে দিয়েছিল। এখন কোনো একটা জিন্না মেম্বর আছে,তার প্রতিদ্বন্ধী। এবার তাকে শেষ করার জন্য আবার একটা নাটক। আমি অন্য কিছু বলি না। শুধু বলি, সেদিন যখন রেন্সুকে আক্রমণ করে । রেন্সু নাকি একা ছিল তার হাতে কোনো অস্ত্র ছিল না। এরা নাকি বারো-তেরো জন দুই তিনটা সিএনজি নিয়ে গান পাউডার ও অনেক অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করেছে। তাহলে ছোট্ট করে একটা প্রশ্ন,এতো বড় একটা আক্রমণ তুমি একা মানুষ কোনো অস্ত্র নাই, লোক নাই, তোমাকে কিছু করতে পারলো না কেন? কি কারণে? কি জাদুর উপরে তুমি বেঁচে গেলে? আহতও হইলা না? পরে গাছের লাগে নাকি তোমার গাড়ি বাড়ি খাইছিল। সেই জন্যে তুমি একটু আহত হইছো। এই সব নাটক করে বিনা কারণে মানুষকে কষ্ট দিয়ে লাভ নাই। এক সময় এক রাখালের গল্প সবাই জানে। রাখাল শয়তানি করে বাঘ এসেছে বলে চিৎকার করেছে মানুষ এসে দেখে যে বাঘ নাই। পরে একদিন ঠিকই যখন বাঘ এলো রাখাল চিৎকার করলো সেদিন আর কেহ এলো না। বাঘ ওই রাখালকে খেয়েই ফেলল। এটা করতে করতে একদিন ঠিকই তোমার উপর আক্রমণ হলে সেদিন আর কেহ আসবে না। মনে করবে এইসব ফালতু নাটক। এবার আমি বলেছিলাম ,যে নিকট সময়ের কিছু প্রসঙ্গ তুলবো,এই গেল রেন্সুর বিষয়টা।
এরপরে আদেল। আদেল নাকি ইস্তেফা দিয়েছে। তার পথ থেকে সে জুয়েন্টসেক্রেটারী ছিল জেলা আওয়ামী লীগের। সে ইস্তেফা দিচ্ছে নিজের থেকে এটা কেউ বিশ্বাস করে না । করবেও না। এটা হতেই পারে না । ধারণা দেয়া হচ্ছে যে, যেহেতু সে একরাম হত্যার আসামি। চার্জসিট হয়েছে,মামলা বিচারাধীন। সেই জন্যই দল থেকে তাকে আগেই দূরে রাখা হয়েছে। এইরকম আরও অনেক যুবলীগ-ছাত্রলীগের অনেক আসামি আছে ভেতরে। যাদেরকে কোনো ইস্তেফা দিতে হয় বলা হয় নাই। এখন আমি কোনো দিন জাহাঙ্গীর আদেলের পক্ষে কোনো কথা বলবো না। বলার সুযোগই নাই তো! কারণ আমিন জুয়েলার্সের ডাকাতিতে সে, নির্মাম সুপার মার্কেটের লুটপাটে সে, এই যে শামীমের ইসমাইলের বিষ খাইয়ে গরু মারার সে। শামীমের ওপর আঘাত করে তার চোখ নষ্ট করে দেয়ার উদ্যোগক্তা সে। ফেনী শহরে একরাম হত্যার আগ পর্যন্ত যত অঘটন ঘটেছে তার ৮০ ভাগেই নায়ক এই  রেন্সু । সুতারাং তার পক্ষে বলার সুযোগ নাই। আমি বলি, রেন্সুর কিন্তু এখন ও সাজা হয় নাই, নির্ধারিত হয় নাই। যে সে দোষী। রায়ের পরে সে নির্ধারণ হবে সে দোষী বা দোষী নন। কিন্তু নিজাম তো নির্ধারিত হয়ে গেছে। তার তো দশ বছরের সাজা হয়ে গেছে। সুতারাং সে তো দোষী সাবস্ত্য। তবে সাবস্ত্য ব্যক্তি ইস্তেফা না দিয়ে যেখানে যে ব্যক্তি এখনো দোষি সাবস্ত্য নয় তাকে ইস্তফা দেয়া যুক্তি সঙ্গত নয়। আমি আগেই বলেছি জাহাঙ্গীর আদেলের পক্ষে কথা একেবারেই বলছি না। তবে প্রশ্ন হচ্ছে যদি ধারা মতে  কাজ করতে হয় তবে জাহাঙ্গীর আদেলকে সাজা দেয়া যাবে। জাহাঙ্গীর আদেলও বাদ যাবে না। রেহাই সে পাবে না বহু রকমের পাপ আছে সে অসখ্য র‌্যাপের সঙ্গে যুক্ত আছে। তার পাপের কোনো শেষ নাই। সুতারাং সে রেহাই পাবে এমনটার সুযোগ আমি দেখি না।
এখন আমার মনে হয়, এবার যেটা সাম্প্রতিকালের আলোচ্য বিষয় সেটা নিয়েই আলোচনা হবে। সেটা হচ্ছে ইকবাল সোবাহান চৌধুরী। তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আমি কিন্তু মামলা হওয়ার বিরুদ্ধে নই। মামলা আমাদের সকলে নাগরিক অধিকার। এটা যে কেহ কারও বিরুদ্ধে করতে পারে। মামলা করা আমি, এখন মামলায় কি হয় কিভাবে হয় সেটা ভিন্ন কথা । মামলা করার অধিকার সকলে আছে। মামলাটা বিধি মোতাবেক যদি হওয়ার যদি সুযোগ থাকে কোনো কোনো সময় মামলা তদন্ত করে নেয় হয়। কোনো সময় অবস্থার প্রেক্ষিতে নেয় হয়। এখন মামলা হয়েছে। সে কথা বাদ, এসব মামলায় কিছু হওয়ার সুযোগ নাই। কোনোদিন কারও হয়ও নাই। দশ কোটি বা একশ কোটি সেটা বিবেচ্য বিষয় নয়। আমার প্রশ্ন হচ্ছে,এই ইকবাল সোবাহানকে নিজাম বলেছে, সে চৌকিদারে ছেলে ব্যক্তিগত আক্রমণ। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাকে বলেছে সে, ‘ইকবাল সোবাহান চৌধুরী নয়’। চৌধুর কে চৌধুরী নয় ,এই খোজ আমি ব্যক্তিগতভাবে দিতে চাই না, কোনো দিনও না। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, ইকবাল সোবাহন চৌধুরী নয় ,এই জন্যই বলা হলো তার বাপের নামের সঙ্গে নাকি চৌধুরী ছিল না। এটা আমি জানি না, কিন্তু এই নিজাম কয়দিন আগে যে ব্যাটমিল্টন টুনামেন্ট করেছে, সেখানে তার বাপের নামের পূর্বে হাজারী নাই। এই যে ব্লাডব্যাংক করেছে পৌরসভায় সেখানে যে নেমপ্লেট দিয়েছে সেখানেও কিন্তু জয়নাল আবেদিন কমিশনার হাজারী নাই। তাইলে বাপের নামের পূর্বে হাজারী না থাকলে যদি ইকবাল সোবাহান চৌধুরী না হয়, তাহলে তুমি কিভাবে নিজাম হাজারী হইলা ক্যামনে? এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই যে ব্লাডব্যাংক যেখানে হাজারী নাই, নিজাম হাজারীর বাপের নামটা লেখা আছে। এটা উদ্বোধন করেছে ইকবাল সোবাহান। এই সেদিন ও  ইকবাল সোবাহান এতোই প্রিয় ছিল যে তার ব্লাড ব্যাংক উদ্বোধন করল ইকবাল সোবাহান। পরবর্তীকালে শহীদ মিনারে দাঁড়িয়ে কত প্রশংসা, শান্তিরদূত কত কিছু হঠাৎ এতো তিতা হয়ে গেলো! এই লোকটা হঠাৎ এতো খারাপ হয়ে গেলো? বলা হচ্ছে, ইকবাল সোবাহানের বাপ নাকি চৌকিদার ছিল। এটা অন্যরা কি বলে জানি না। আমি শুধু বলি, ইকবাল সোবাহানের বাপ যদি চৌকিদার হতো। ইকবাল সোবাহানের বাপের কাছে ফজলে সোবাহান সাহেব তার মেয়ে বিয়ে দিতেন না। ফজলে সুবাহান সাহেব হচ্ছেন পাক-ভারত উপমহাদেশের একজন খ্যাতনামা ইনকাম ট্যাক্সের অ্যাডভোকেট। সেই ইনকাম ট্যাক্সের অ্যাডভোকেটের বাসাটা ঠিক আমার বাসার উল্টো দিকে। যেটা এতো দিন দোতলা বিল্ডিং ছিল। সব মানুষ দেখতে আসত। সেই বিল্ডিংয়ের মালিক। সেই ফজলে সোবাহান সাহেবের মেয়েকে যার কাছে বিয়ে দিয়েছে,সে যদি চৌকিদার হতো। এতো বড় উকিল। তার কাছে তার মেয়ে বিয়ে দিতেন? এই ফজলে সোবাহান সাহেব আমার আব্বার খুব প্রিয় ছিল। খুব খাতির ছিল দুজনের ফলে আমার আব্বা ও ফজলে সোবাহান সাহেবের কবর পাশাপাশি অনন্ত কালের জন্য হাজার বছরের জন্য লক্ষ বছরের জন্য শুয়ে আছে ফজলে সুবাহান ও আমার আব্বা পাশাপাশি। কেননা ফজলে সুবাহান সাহেব আমাদের পরিবার না হলেও আমাদের দু পরিবারের মধ্যে এখনো একিভূত হয়ে আছে যেহেতু আমার আব্বার খাতিরে তার পাশেই তাকে দাফন করা হয়েছে। এটা আমাদের পারিবারিক গোরস্থানকে আমি মনে করি গৌরবন্নিত করেছে খারাপ কিছু হয় নাই। যাই হোক এসমস্ত কথা ব্যক্তিগত আক্রমণ আমি মনে  করি একেবারেই উচিত নয় । এখন হঠাৎ করে আমরা ইকবাল সোবাহানের বাপ চৌকিদার, হঠাৎ করে ইকবাল সোবাহান চৌধুরী নয় বা কেউ কেউ এর আগেও আগ বাড়িয়ে বলেছে ইকবাল সোবাহানের লাশ ও ফেনীতে আসতে দিবে না। এগুলোর উত্তর ইকবাল সোবাহানই দিবে। সবকিছু আরও অনেক কথা বলেছে। আমার চাইতে অনেক বেশি বিচেক্ষণ, অনেক বেশি জ্ঞানী অনেক কিছু বোঝে ইকবাল সেবাহান। সুতারাং নিজের ব্যাপারটা সে নিজেই বলবে, আমি বলতে গেলে কোনটা ভুল হয় কি হয়। শেষে আবার আমার উল্টো আমার দোষ হয়ে যেতে পারে। এখন আমি বলি যে ইকবাল সোবাহান সাহেবের বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছে। সেই মামলার পরে আরও কিছু ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে ঘটেছে। সেগুলো আমার মনে হয় সাংবাদিকরা প্রতিবাদ করেছে। আরও প্রতিবাদ হবে। এগুলো চলবে।
এখন আমি আর একটি কিছুটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলতে চাই। সেটা হচ্ছে এসপি। একজন পুলিশের এসপিকে নিজাম প্রকাশ্যে মাইকে বলেছে এটা একুশে গ্রেনেড হামলার সঙ্গে যুক্ত। সে তার বিচার করবে ফেনীর মাটিতে। সে তাকে বদলি করতে পারে কিন্তু করবে না। বিচার করে ছাড়বে। এবং বলেছে, এই এসপি যেখানে যাবে, যেই অনুষ্ঠানে যাবে ,সেখানে আওয়ামী লীগের কোনো লোক যেতে পারবে না নির্দেশ। কিন্তু  কিছুদিন আগে আইজি সাহেব এলেন ফেনীতে। স্বরাষ্ট্র সচিব এলেন ফেনী। সেখানে এসপি সাহেব ছিলেন। সদম্ভে ছিলেন বক্তৃতা করেছেন। বিশেষ করে কামাল স্বরাষ্ট্র সচিবের মিটিংয়ে আওয়ামী লীগের তো সকল কর্মীরাই তো উপস্থিত ছিল। তাহলে এই যে বলল, কেউ যেতে পারবে না, ফালতু হয়ে গেলো। আর যেই এসপির বিরুদ্ধে এতো হুমকি দুমকি,এতো অভিযোগ, এতো কিছু। আজও পর্যন্ত তাকে বদলিটাই করা গেলো না। যদিও এসপি সাহেব নিজেই বলছেন, বদলি আমাকে করতেই হবে, কেননা আমি নিজেই সর্বশেষ আল্টিমেটাম দিয়ে বলেছিলাম, আমাকে বদলি না করলে আমি চাকরিটাই ছেড়ে দেবো। আমি মনে করেছিলাম বদলিটা হয়ে যাবে। কিন্তু আজও পারে নাই এরা। তাইলে কেন এই সব শয়তানি করা, কেন এইসব নোংরামি করা। একটি পুলিশের এসপি আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করবে তাকে যদি আমরা দুর্বল করে ফেলী, তাহলে চুরি, ডাকাতি রাহজানি এইসব মাদক ইত্যাদিতে তো দেশ ভরে যাবে। পুলিশকে যতই আমাদের ওপর অন্যায় অত্যাচার করেছে, পুলিশ থাকতে পারবেন  কোনোদিন বলতে পারিনাই বলি নাই, বলব না। পুলিশ লাগবেই। পুলিশ ছাড়া তো এই সমাজের শৃঙ্খলা ঠিক রাখা আমাদের আইন শৃঙ্খলা ঠিক থাকবে না। মানুষে মানুষে তখন মানুষ আর আদিম সমাজ এক হয়ে যাবে। পুলিশ লাগবেই। তাহলে পুলিশকে অকেজো করে দিলে। এটা কিন্তু  নিজাম এই যে কোরাবানীর সময় গরু দিল টাকা দিল সব মুছে দিয়েছে। অনেক পুলিশ তাতে আঘাত পেয়েছে। তারা বলেছে, আমাদের নেতা,আমাদের অফিসার তাকে এভাবে হেয় করা ,এটা তারা কিছুতেই মানতে পারে নাই, পারে না। এখন আমলাদেরকে সংবর্ধনা দেয়ার নীতি ,রাজনৈতিক নেতাদের মতো করে আর শুনি নাই। হচ্ছে, হয়েছে ফেনীতে। কামাল ও মেনে নিয়েছে সংবর্ধনা নিয়েছে মন্ত্রীও হয়েছে। সেই কামালকে সম্মান করেছে যখন তখনকার ঘটনা শুনলে আবার বুঝবেন,যে কামালের এই স্বরাষ্ট্রসচিব কামালের আপন ভাগ্নি জামাইয়ের মানে যেখানে কামালকে সংবর্ধণা দেয়া হচ্ছে তার থেকে এক হাজার গজ দক্ষিণে কামালের ভাগ্নিজামাইয়ের সম্পূর্ণ বৈধ একটি জমিকে দখল করে নিজামের এক ক্যাডার ঘর করছে, যখন ও ঘরটি তৈরি হচ্ছে তখনও। আগে থেকে শুরু হয়েছে। এখন এই কামাল স্বরাষ্ট্রসচিবের ভাগ্নিজামাইয়েইকে নিয়েই পুলিশ টানাটানি লাগাইলো আবার ওকে পাহারা দিচ্ছে পুলিশ। তাইলে এটাকি স্বরাষ্ট্রসচিবকে সম্মান দেখানো হচ্ছে। আমি বলি তদন্ত করে দেখুন। সত্য কিনা জয়নাল হাজারী মিথ্যা কথা বলে না। এটাও কোনো কারণে বলে নাই, এটা ওই কামালের আপন ভাগ্নিজামাইয়ের বৈধ তার বাপের দেয়া জমি। সেই জমির ওপর অবৈধভাবে ঘর করতে, সেটাকে যদি স্বরাষ্ট্রসচিব বাঞ্চাল করতে না পারে, বাধা নিতে না পারে, সুরাহা করতে না পারে, তাকে তাইলে এরা যারা দখল করছে তারা এখানে সংবর্ধনা দিচ্ছে, ওখানে তার ভাগ্নিজামাইয়ের ঘর দখল করছে এটাতে কামালে প্রতি সম্মান প্রদর্শন নয়। আমি সব সময় বলেছি, যে আমরা যখনই কেউ আসে তাকে নিয়ে এতে বেশি বাড়াবাড়ি করি, যে পরবর্তীকালে আমরা সেটাকে ভিন্নরূপে পরিগ্রহ করি এবং এই ভিন্নরূপটা আমাদেরকে আপাদত আমরা ইয়ে করি। এখন নিজামতো নরমালী সংসদে যায় না। সে সংসদ সদস্য। সংসদ সদস্যের মূল দায়িত্বই হচ্ছে সংসদে কথা বলা। আমাদের ভালো মন্দের সমস্যা তুলে ধরবে সংসদে। কিন্তু যায়ও না, সংসদে বলেও না । যাইহোক শামীম ওসমান একদিন সংসদে বক্তৃতা দিয়েছে শুনে, বাহবা পেয়েছে শুনে সেও গেল ও বক্তৃতা দিল। কিন্তু দিয়ে বলল কী, নাসিমকে নাকি ফেনীর পিতার মতো কি একটা বলেছে আর একটা যে ফেনীর স্টাইলে সারা দেশের নির্বাচন করতে হবে। এর চাইতে লজ্জাস্কর, হেও প্রতিপন্ন করা পুরো ফেনীবাসীকে বক্তৃতা দিতে গিয়ে এভাবে হেও প্রতিপন্ন করা এটা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। এখন এসপির সভা বর্জন করতে বলে কেউ শোনে না, মানে না। এসপিকে ফেনীর মাটিতে বিচার করবে, এসপির ব্যাপারে আরও অনেক কিছু কোনো কিছু বিভিন্ন সময়ে এই সমস্ত ঘোষণা দেয়া, এই সমস্ত ফালতু কথা বলা, এগুলোতে কি কাজ আছে আমি এটার কোনো অর্থ বুঝিনা।
কিন্তু যাইহোক আমি এখন একটু অন্য প্রসঙ্গে যেতে চাই। সেটা হচ্ছে আমাদের সুপ্রিম কোর্ট থেকে একটি রায় বা একটা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যে একরাম হত্যা মামলাটিতে ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতেই হবে। কিন্তু আজকে এক দেড় বছর পেরিয়ে গেলো এই মামলাটির কোনো নিষ্পত্তি হচ্ছে না। এখন এই মামলাটির সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কেন নিষ্পত্তি হচ্ছে না সেটা আমি কিছুতেই বুঝতে পারছিনা। এটা আমার মনে হয়, এটা নিষ্পত্তি হওয়া দরকার এবং নিষ্পত্তি হয়ে গেলে যা হওয়ার হবে। যদিও এক এক জন এক এক কথা বলে, রেকর্ডপত্র সরিয়ে ফেলা হয়েছে ওই যে ভিডিও করার ফুটেজ ছিল ওগুলো পুড়িয়ে ফেলেছে ইত্যাদি। যাইহোক ওই সকল বিষয় নিয়ে কথা বেশি বলি না। আমি শুধু বলি সর্বচ্চো আদালতের নির্দেশনা এই মামলা ছয় মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে এটা হয় নাই।
 এখন আরেকটা বিষয় হচ্ছে, আমাদের এরা ইদানিং হঠাৎ করে আগে মধ্যেখানে বলতো না। এখন বলা শুরু করেছে, যে কিছুলোক ঢাকায় বসে আমাদের বিরুদ্ধে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। আমরা এইসব ষড়যন্ত্রের মোকাবিলা করবো। আমার মনে হয় দেশবাসীর মনে আছে। ফেনীবাসীর মনে আছে। এরকম আমাদের বিশেষ করে যুদ্ধের সময় পাকিস্তানিরা প্রতিদিন রেডিও টেলিভিশনে বলতো, ভারতে বসে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে আমরা তাদেরকে ধ্বংস করে ফেলবো ইত্যাদি। সেই স্বাধীনতা যুদ্ধেকে তারা ষড়যন্ত্র বললেও ,ওই ষড়যন্ত্র দিয়েই দেশ স্বাধীন হয়েছে। অপশক্তির মৃত্যু হয়েছে, আমরা জয়লাভ করেছি। একই সুরে একই ভাষায় এরা বলছে একদিন বঙ্গবন্ধুকে বলা হয়েছিল যে আগরতলায় ষড়যন্ত্র করেছে, মামলা দিয়েছিল। ফাঁসির কাষ্টে নিয়ে যেতে চেয়েছিল পারেনাই। এদেরও ভাষাটা একই। ঢাকায় বসে ষড়যন্ত্র করছে। সব চাইতে বড় জিনিস ষড়যন্ত্রটা কি? এটা তারা বলতে পারে না। উল্লেখ করো, যে এটা করছে। কোনো দিন উল্লেখ করে নাই খালি, আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত করছে ঢাকায় বসে। আরে ঢাকায় বসে না চিটাগাংয়ে বসে না লালপোল বসে সেটার দরকারটা কি। কি ষড়যন্ত্র হচ্ছে সেটা বল? কেউ কোনো ষড়ষন্ত্র করছে না। বরং আমি বলি, যেভাবে ভারতে বসে আমরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। ঢাকায় বসে নয়। আমি বলি, সেভাবেই একদিন ষড়যন্ত্র নয়, একদিন প্রতিরোধের মুখে এই যে জালেমরা আজকের ফেনীতে একটা অরাজগবস্থা সৃষ্টি করেছে তাদের থেকে মুক্ত হবে। দেশ মুক্তি হয়েছিল যেভাবে, আমার ফেনীও মুক্ত হবে! ইতিহাস বলে কোনো বিকল্প নাই। জালিম কোনোদিন স্থায়ি হয় নাই। কোনো জালিম আমি জানি, ফেনীর মানুষের মধ্যে খানিকটা হতাশা সৃষ্টি হয়েছে। হতাশার কিছু নাই, ইতিহাসটা শুধু পড়–ন,ইতিহাস পড়লে দেখবেন যেইভাবেই হোক, জালিমের পতন অনিবার্য। এটা হতেই হবে। কেউ কেউ বলছে, আমাকে সাখাওয়াতের এক বন্ধু বলছিল ভাইয়া ওদেরকে তো একটু ফুরফুরে মেজাজের দেখা যাচ্ছে। হ্যা এটাইতো আসল ! ফুরফুরে মেজাজে দেখা যাচ্ছে মানে এটা হচ্ছে বাতি নেভার আগে জ্বলে ওঠা। জালেমদের সব সময় বাতির তেল যখন শেষ হয়ে যায় তখন নিভে যাওয়ার আগে আবার নেভার হঠাৎ আবার জ্বলে ওঠে। এরাও এখন বাতি নিভার আগে একটু জ্বলে উঠছে। বেশিদিন নাই, ওরা যতই সময় যাচ্ছে ওরা যতই হুমকি দুমকি করুক, যতই বড় বড় ঘোষণা করুক, যতই যত কথা বলুক, টাকার জোরে বেশি দিন টিকা যায় না। ওরা টিকবে না ! সময় প্রতিটা মুহূর্তেই তাদের বিরুদ্ধে যাচ্ছে। প্রতিটা মুহূর্তেও ওদের মৃত্যুর কাছাকাছি বা পতনের কাছাকাছি ওরা চলে আসছে। এটা হতেই হবে। হতাশ হয়ে লাভ নাই।
আমি আগামী মাসে একটা দিক নির্দেশনা দিবো। ফেনীর জনগণকে পরীক্ষা করবো। এবং শেষ বয়সে নিজে  শেষ খেলাটা খেলে দুনিয়া থেকে চলে যেতে চাই। আল্লাহর কাছ থেকে বিদায় নিব। আল্লাহকে বলব নিয়ে নাও। শেষ হয়েছে আর না একটা খেলা খেলব। সেই খেলারটার দিক নির্দেশনাটা আমি আগামী মাসে আশা করছি দিব। এখন আজকে আমি বলি যে, জহির রায়হান মেলা করেছে কিছু ছেলে। আমি খুব খুশি হয়েছি। তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই, অভিবাদন জানাই এবং জহির রায়হানের মতন লোক আমাদের গর্বতো। আমরা এদেরকে যত উচুতে তুলবো ততো তো আমরাও উঁচুতে উঠব। কেউ তাকে ঠিক মতো স্মরণ করে না তার নামে একটা হল ছিল ভেঙে ফেলে দিয়েছে করার ঠিক নাই। এই ছেলেরাই হলটা করার জন্যে চাপ দিবে আন্দোলন করবে আমি মনে করি। সেজন্য আমি খুব খুশি হয়েছি। তাদেরকে এটা করার জন্য।
এখন আমি ময়নামতি বিভাগে ফেনীকে অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে বলে আমি খুব খুশি হয়েছি। আমার আগেই এটা নিয়ে একটা বিশ্লেষণ ছিল। আমি ঢাকা যাওয়ার পথে কুমিল্লা দিয়ে কাজটা করে নিলাম। ময়নামতি মানে কুমিল্লা কিন্তু। ভুল বোঝার অবকাশ নাই। ফেনী থেকে ঢাকা যাব পথে কুমিল্লায় কাজটা সেরে গেলাম। আবার ঢাকা থেকে ফেনীতে আসবো। পথে কুমিল্লা দিয়ে কাজটা সেরে এলাম। আমার কুমিল্লা যেতে লাগে ৪৫ মিনিট বা আধা ঘন্টা বড় জোর এক ঘন্টা। আর চিটাগাং যেতে লাগে দেড় ঘন্টা ২ ঘন্টা যানজটের অন্তনাই। আমার জন্যে সুবিধা যেটা আমি চেয়েছি সেটা হয়েছে। এজন্য আমি খুশি। এজন্য আমি এটাকে স্বাগত জানাই। আমার সমর্থক যারা, আমার লোক যারা ,তাদের সবাইকে বলবো, কোনো বিতর্কে কান দিবেন না। যারা চট্টগ্রামে বিভাগকে ফেনীর সঙ্গে অর্ন্তভুক্ত চেয়েছিল তারা তাদের লোকজন আছে তাদের স্বার্থের চায়, তাদের তাদের ব্যবসা বানিজ্য আছে শ্বশুর-শ্বাশুড়ি আছে ইত্যাদি। আমাদের এসব ব্যাপার নাই।  
আমরা কোথায় তাড়াতাড়ি কাজ করতে পারবে যেতে পারবো- আসতে পারবো এটা বুঝি। ময়নামতিতে ফেনীকে রেখেছে এজন্য আমি খুশি। আর এভারে অনেক ঘটনা অঘটনের পড়ে এনা পরিবহন অবশেষে ফেনীতে ঢুকেছে। এনা পরিবহণ ঢুকেছে এটা ভাল হয়েছে। এই স্টারলাইনওয়ালার দীর্ঘদিন বছরের পর বছর অন্য কোনো লাইনকে ঢুকতে দেয় নাই। বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করে। অথচ সাড়া বাংলাদেশেই একাধিক পরিবহন আছে। ফেনীতে ছিল না এতো দিন। এখন একটা ঢুকেছে। এখন সার্ভিস পাবে মানুষ। মানুষের সুবিধা হবে। মানুষ ও খুশি, আমিও খুশি। এটাকে আমি স্বাগত জানাই। এখন আমি বোধ হয় আজও আধা ঘন্টা পার করে ফেলেছি। ইচ্ছা থাকে না, তবুও না বলে পারি না। যাই হোক এখন আমি আমার ফেনীবাসীর কাছে আবার ও মাফ চাই এ জন্যে যে অনেকটা বিলম্ব হয়ে গেছে। এবারের ভাষণটা দিতে। আগামী ভাষণটা আমি আশা করি,যথাসময় দিতে পারবো। ফলে ১৫-১৬-১৭


সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল হাজারী।   ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: গোলাম কিবরীয়া হাজারী বিটু্।   প্রকাশক: মোঃ ইব্রাহিম পাটোয়ারী।
সহ সম্পাদক- রুবেল হাসান: ০১৮৩২৯৯২৪১২।  বার্তা সম্পাদক : জসীম উদ্দিন : ০১৭২৪১২৭৫১৬।  সার্কুলেশন ম্যানেজার : আরিফ হোসেন জয়, মোবাইল ঃ ০১৮৪০০৯৮৫২১।  রিপোর্টার: ইফাত হোসেন চৌধুরী: ০১৬৭৭১৫০২৮৭।  রিপোর্টার: নাসির উদ্দিন হাজারী পিটু: ০১৯৭৮৭৬৯৭৪৭।  মফস্বল সম্পাদক: রাসেল: মোবা:০১৭১১০৩২২৪৭   প্রকাশক কর্তৃক ফ্ল্যাট নং- এস-১, জেএমসি টাওয়ার, বাড়ি নং-১৮, রোড নং-১৩ (নতুন), সোবহানবাগ, ধানমন্ডি, ঢাকা থেকে প্রকাশিত এবং সিটি প্রেস, ইত্তেফাক ভবন, ১/আর কে মিশন রোড, ঢাকা-১২০৩ থেকে মুদ্রিত।  বার্তা, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ০২-৪১০২০০৬৪।  ই-মেইল : [email protected], web : www.hazarikapratidin.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি