শুক্রবার, ২৯ মার্চ, 2০২4
ভারতীয় ভ্যারিয়্যান্ট: ২৫টির বেশি নমুনার সিকোয়েন্সিং পরীক্ষা করছে আইইডিসিআর
হাজারিকা অনলাইন ডেস্ক
Published : Saturday, 15 May, 2021 at 4:37 PM

এখন পর্যন্ত ভারত থেকে ‘করোনা পজিটিভ’ রিপোর্ট নিয়ে আসা রোগীদের নমুনার সিকোয়েন্সিং পরীক্ষা করছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর)। এসব সিকোয়েন্সিং সম্পন্ন করতে অন্তত এক সপ্তাহ সময় লাগে। তারপর জানা যাবে, এদের মধ্যে ভারতীয় ট্রিপল মিউট্যান্ট ভ্যারিয়্যান্ট রয়েছে কি না। আজ শনিবার দুপুরে আইইডিসিআরের একজন ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ভারতীয় ভ্যারিয়্যান্ট রয়েছে কি না জানতে যে নমুনার সিকোয়েন্সিং পরীক্ষা করা হচ্ছে তার সংখ্যা ২৫ জনেরও বেশি হবে। তবে এখনই নির্দিষ্ট করে বলতে পারছি না, সংখ্যাটি কত হবে।

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, তবে শুধু আইইডিসিআর এসব সিকোয়েন্সিং করছে, বিষয়টি কিন্তু তেমন নয়। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি), শিশু হাসপাতাল ও সায়েন্স ল্যাবরেটরিতেও করোনা নমুনার এই সিকোয়েন্সিং পরীক্ষা করা হচ্ছে। তবে ওই তিন প্রতিষ্ঠানে মোট কতজনের নমুনার সিকোয়েন্সিং পরীক্ষা করা হচ্ছে, তা আমার জানা নেই। কিন্তু আইইডিসিআরই বেশি সিকোয়েন্সিং করা হচ্ছে।
এসব ব্যাপারে আইইডিসিআরের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন বলেন, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ভারত থেকে যতজন করোনা পজিটিভ রোগী এসেছে, তাদের মধ্যে ছয়জনের সিকোয়েন্সিং পরীক্ষায় ভারতীয় ভ্যারিয়্যান্ট শনাক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও বেশ কিছু ভারত থেকে আসা করোনা রোগীর সিকোয়েন্সিং করা হচ্ছে। এই সিকোয়েন্সিং-এর জন্য অনেকগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হয়। সিকোয়েন্সিং-এর ফল পেতে এক সপ্তাহের মতো সময় লাগে।

তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে স্থলযোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়ার পর থেকে ভারত থেকে দেশে আসা সব করোনা পজিটিভ রোগীর নমুনার সিকোয়েন্সিং করা হচ্ছে। আমরা সতর্ক রয়েছি। সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন হতে বলা হয়েছে। এখন স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বিকল্প নেই। কারণ, ভারতীয় ভ্যারিয়্যান্ট আসা বন্ধ করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। ফলে করোনা থেকে বাঁচতে সতর্ক থাকাটাই একমাত্র পন্থা।

গত ৮ মে দেশে প্রথম ছয়জনের দেহে করোনা ভাইরাসের ভারতীয় ধরন শনাক্ত হওয়ার তথ্য জানিয়েছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। ওই ছয়জনের মধ্যে চারজন দেশের বিভিন্ন স্থানের বাসিন্দা, আর ঢাকার বাসিন্দা ছিলেন দুজন। ঢাকায় ভারতীয় ভ্যারিয়্যান্ট ধরা পড়া ওই দুজনের একজন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) এবং আরেকজন এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাকি চারজন যশোরসহ অন্যান্য স্থানে চিকিৎসাধীন।

মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ওই ছজনের সবাই এখন পর্যন্ত ভালো আছেন। আর গতকাল রাজধানীর ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালে দুজন রোগীর শরীরের করোনার ভারতীয় ধরন পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে। কিন্তু এ তথ্য সত্য নয়। তারা দুজনই সন্দেহভাজন। সিকোয়েন্সিং করার আগে নিশ্চিত হওয়া যাবে না যে, তাদের শরীরের ওই ভ্যারিয়েন্টটির উপস্থিতি রয়েছে।
করোনা ভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়্যান্টে বিপর্যস্ত পুরো ভারত। ভাইরাসের এই ধরনটি অনেক শক্তিশালী’ বলে মত বিশেষজ্ঞদের। ফলে তা মোকাবিলা করা মুশকিল হচ্ছে। এই পেক্ষাপটে ভারতীয় এই ভ্যারিয়্যান্ট মিলেছে বাংলাদেশেও। এ নিয়ে পুরো দেশ উদ্বিগ্ন।

কথা প্রসঙ্গে অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, ভারতীয় ভ্যারিয়্যান্ট নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। সবারই এটি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত। এটা আটকানোর সযোগ যেহেতু আমাদের নেই, খুবই সচেতন থাকতে হবে। নতুবা এ ভ্যারিয়্যান্ট বিপদ ডেকে আনতে পারে।
ভারতীয় ধরনে আক্রান্ত দুজন শনাক্ত হওয়ার আশঙ্কার বিষয়ে ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির বলেন, ‘দুজন রোগী আমাদের হাসপাতালে রয়েছেন। তাদের সিকোয়েন্সিং পরীক্ষা করার পর জানা যাবে ভারতীয় ট্রিপল মিউট্যান্ট ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি রয়েছে কি না। তাদের অন্য একটি হাসপাতালে স্থানান্তর করার চিন্তা করা হচ্ছে। তারা দুজন ভালো আছেন। আমরা সতর্ক রয়েছি তাদের ব্যাপারে।

অন্যদিকে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, ঢাকা মেডিকেলে ভারত থেকে আসা কয়েকজন এসেছিলেন করোনার নমুনা পরীক্ষা করতে। যদিও তারা ভারত থেকে নেগেটিভ রিপোর্ট নিয়ে এসেছিলেন। এখানেও তাদের রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। পরে তারা বাসায় চলে যান। তবে, আমাদের দেশে ভারতীয় ভ্যারিয়্যান্ট পাওয়া যাবে না, এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। অন্যান্য দেশে যেভাবে ভারতীয় ভ্যারিয়্যান্ট পাওয়া যাবে, বাংলাদেশেও সেভাবে পাওয়া যাবে। এবং এটা নিয়েই আমাদের চলতে হবে। তবে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে, যাতে অতিরিক্ত মাত্রায় ভ্যারিয়্যান্টটি ছড়িয়ে না পড়ে। অতিরিক্ত মাত্রায় ছড়িয়ে পড়লে তা বিপদ ডেকে আনতে পারে। সুতরাং সরকার, সংশ্লিষ্ট মহলসহ আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। আমার ধারণা, এ ভ্যারিয়্যান্টটি ধীরে ধীরে সব স্থানে ছড়িয়ে পড়বে। এবং সেটা মোকাবিলা করার জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।


সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল হাজারী।   ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: গোলাম কিবরীয়া হাজারী বিটু্।   প্রকাশক: মোঃ ইব্রাহিম পাটোয়ারী।
সহ সম্পাদক- রুবেল হাসান: ০১৮৩২৯৯২৪১২।  বার্তা সম্পাদক : জসীম উদ্দিন : ০১৭২৪১২৭৫১৬।  সার্কুলেশন ম্যানেজার : আরিফ হোসেন জয়, মোবাইল ঃ ০১৮৪০০৯৮৫২১।  রিপোর্টার: ইফাত হোসেন চৌধুরী: ০১৬৭৭১৫০২৮৭।  রিপোর্টার: নাসির উদ্দিন হাজারী পিটু: ০১৯৭৮৭৬৯৭৪৭।  মফস্বল সম্পাদক: রাসেল: মোবা:০১৭১১০৩২২৪৭   প্রকাশক কর্তৃক ফ্ল্যাট নং- এস-১, জেএমসি টাওয়ার, বাড়ি নং-১৮, রোড নং-১৩ (নতুন), সোবহানবাগ, ধানমন্ডি, ঢাকা থেকে প্রকাশিত এবং সিটি প্রেস, ইত্তেফাক ভবন, ১/আর কে মিশন রোড, ঢাকা-১২০৩ থেকে মুদ্রিত।  বার্তা, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ০২-৪১০২০০৬৪।  ই-মেইল : [email protected], web : www.hazarikapratidin.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি