শিরোনাম: |
ভারসাম্যহীন তরুণীকে একযুগ লালন-পালন, ফিরিয়ে দিলেন পরিবারের হাতে
হাজারিকা অনলাইন ডেস্ক
|
![]() এলাকাবাসী জানায়, মানসিক ভারসাম্যহীন ওই তরুণী এলাকার বিভিন্নস্থানে উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরতে থাকেন। একপর্যায়ে তার থাকার জায়গা হয়ে বাজারের এক ছাউনিতে। তরুণীকে সেখানে দেখে তার লালন-পালনের দায়িত্ব নেন স মিল মালিক রনি। রনি নতুন করে তার নাম রাখেন লাইলী, খুঁজতে থাকেন তার ঠিকানা ও পরিচয়। অবশেষে দীর্ঘ ১১ বছর পর ফেসবুকের কল্যাণে ওই নারীর পরিবারের সন্ধান পান তিনি। জানতে পারেন, লাইলীর আসল নাম দুর্গা রানী। হারিয়ে যাওয়ার সময় দুর্গার বয়স ছিলো ১৪ বছর। বর্তমানে তার বয়স ২৫ বছর। দুর্গা রানীর স্বামী রমেশের বাড়ি দিনাজপুরের সস্তীতলা শহীদুল কলোনিতে। বাবার বাড়ি বগুড়া জেলার সান্তাহারের সুইপার কলোনিতে। দুর্গা রানী ওই কলোনির রতন হরিজনের মেয়ে। স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে আসা রমেশ জানান, হারিয়ে যাওয়ার আগে কিছু মানসিক সমস্যা দেখা দেয় দুর্গার। তাকে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খাওয়ানো হয়। এরই মাঝে ১১ বছর আগে হঠাৎ নিরুদ্দেশ হন তার স্ত্রী। এরপর থেকে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজি করেও তাকে আর পাওয়া যায়নি। হারিয়ে যাওয়া ভারসাম্যহীন বোনকে ফিরে পেয়ে আশ্রয়তাদা রিপনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান দুর্গার ভাইয়েরা। বলেন, ‘প্রায় ১১ বছর ধরে রনি ভাই আমাদের বোনকে স্বযত্নে লালন-পালন করে আজ আমাদের কাছে ফিরিয়ে দিচ্ছেন। এটা মানবতার এক অনন্য উদাহরণ। আমাদের বোনকে ফিরে পেয়ে আমরা খুবই আনন্দিত। রনি ভাইকে ধন্যবাদ দেয়ার ভাষা আমাদের জানা নেই।’ এদিকে, দীর্ঘদিন দুর্গাকে বোনের আদরে লালন-পালন করা রনি তার বিদায়ের দিন চোখের জল আড়াল করতে পারেননি। অশ্রুসিক্ত নয়নে রনি বলেন, ‘১১ বছর ধরে ওর পরিচয় ও পরিবারের সন্ধান পেতে বিভিন্ন মাধ্যমে চেষ্টা চালিয়েছি। অবশেষে কোনো উপায় না পেয়ে ফেসবুকে ওর সন্ধান পেতে ছবি সম্বলিত একটি পোস্ট দেই। ফেসবুকের কল্যাণে পাওয়া যায় দুর্গার পরিবারের সন্ধান। ’ তিনি বলেন, ‘দুর্গাকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। ও যেন বাকি জীবনটা পরিবারের সঙ্গে সুখে-শান্তিতে কাটাতে পারে। সৃষ্টিকর্তার কাছে সেই প্রার্থনা করি। ‘ শুধু তাই নয়, দুর্গার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনে সব ধরনের সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। এদিকে, নাগরপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আমিনুল বলেন, ‘মানবতার কাছে পৃথিবীর সব আইন তুচ্ছ। রনি ভাইয়ের মানবতায় ভারসাম্যহীন মেয়েটিকে তার পরিবার ফিরে পেয়েছে। সত্যিই এটা মানবতার এক অনন্য উদাহরণ।’ |